কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান রিতা দাস। — ফাইল চিত্র।
কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে এ বার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন বিজেপির আইনজীবী নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। রবিবার তিনি কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাছে পুরসভার দরপত্র দুর্নীতি নিয়ে পুরপ্রধান রিতা দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। প্রসঙ্গত, তরুণজ্যোতির করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই হাই কোর্ট কৃষ্ণনগর শহরে সৌন্দর্যায়নের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি পদ্ধতি মেনে পুরসভাকে দরপত্র নিয়ে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে।
নতুন বোর্ড গঠন হওয়ার পর কৃষ্ণনগর শহরকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগী হয় পুরসভা কর্তৃপক্ষ। সেই মতো কল্যাণীর একটি সংস্থাকে সেই কাজের বরাত দেওয়া হয়। দু’পক্ষের মধ্যে মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি অনুসারে কাজও শুরু হয়। কিন্তু গোটা কাজের প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তরুণজ্যোতি হাই কোর্টে মামলা করেন। তিনি দাবি করেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যেখানে পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি কাজ হলে ই-টেন্ডার ডাকা বাধ্যতামূলক সেখানে কোনও রকম দরপত্র না চেয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে কাজের বরাত দিয়েছে পুরসভা। তরুণজ্যোতির দাবি, সৌন্দর্যায়নের নামে একটি সংস্থাকে সম্পুর্ণ বেআইনি ভাবে পাঁচ কোটি টাকার কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল।
গত ১৮ এপ্রিল হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, কৃষ্ণনগরের সৌন্দর্যায়নের দরপত্র না নিয়ে শুধু মাত্র চুক্তি করে কাজের বরাত দেওয়া বেআইনি ছিল। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে সেই চুক্তি বাতিল করে সরকারি নিয়ম মেনে নতুন করে দরপত্র চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যে সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল তাদের লাগানো সমস্ত হোর্ডিং সাত দিনের মধ্যে খুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাঙ্গনাম ও হিরণময় ভট্টাচার্য।
সম্প্রতি পুরপ্রধান নিজে সাংবাদিক সম্মেলন করে ভুল স্বীকারও করে নিয়েছেন। তবে এরই মধ্যে তিনি তরুণজ্যোতির বিরুদ্ধে কৃষ্ণনগর আদালতে ১ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন। এ বার তরুণজ্যোতি পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ করলেন। এ দিন তরুণজ্যোতি দাবি করেন, “দুর্নীতি যে হয়েছে সেটা আদালতের রায়েই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। যে বা যারা সেই দুর্নীতি করেছে তাকে তো আইনত শাস্তি পেতেই হবে।” তাঁর হুঁশিয়ারি, পুলিশ তদন্ত না করলে হাই কোর্ট আছে।” কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান, তৃণমূলের রিতা দাস বলেন, “যে কেউ অভিযোগ জানাতে পারেন। আমরা আইনি পথেই তার মোকাবিলা করব। আমরা নিজের জায়গায় ঠিক আছি।”