সভায় ঋতব্রত। নিজস্ব চিত্র
বিধায়ক আমিরুল ইসলামের রাজনৈতিক ক্ষমতা বাড়ল। সারা বাংলা বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁকে। বর্তমানে বিধায়ক ছাড়াও দলের আইএনটিটিইউসি’র জঙ্গিপুর জেলার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
শুক্রবার শমসেরগঞ্জের কাঁকুড়িয়া মাঠে বিড়ি শ্রমিক সমাবেশে এই ঘোষণা করে রাজ্য জুড়ে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি ২৪০ টাকা করার দাবি নিয়ে বিড়ি মালিকদের বিরুদ্ধে আমিরুলকে জোরদার আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিলেন আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিড়ে ঠাসা আমিরুল ইসলামের এই বিড়ি শ্রমিক সভায় মঞ্চে দেখা গেল একমাত্র বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি শাঁওনি সিংহ রায়কে। কিন্তু হাজির হলেন না জঙ্গিপুরের দলের আমিরুল ছাড়া অন্য সাত বিধায়ক, মন্ত্রী, সাংসদ সহ সাংগঠনিক জেলার কোনও নেতাই।
ঋতব্রতের এই ঘোষণায় কিছুটা হলেও অস্বস্তি বাড়াল তৃণমূলের। কারণ তৃণমূলের সংগঠনের প্রথম সারিতে রয়েছেন একাধিক বিড়ি মালিক। বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বর্তমানে ১৭৮ টাকা প্রতি হাজারে। দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরদিঘিতেই ঘোষণা করেছেন সেই মজুরি বেড়ে হোক ২৪০ টাকা। সেই ইচ্ছেকে সমর্থন জানাতেই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের এ দিনের সভার আয়োজন। প্রধান বক্তা ছিলেন ঋতব্রত। কিন্তু তাঁর কথায় মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে তেমন সুনিশ্চিত কোনও ভরসা এদিন পেলেন না শ্রমিকেরা।
দলের দুই বিড়ি মালিক সাংসদ খলিলুর রহমান ও বিধায়ক জাকির হোসেন বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে টুঁ শব্দটিও এখনও করেননি। বরং তাঁদের বিড়ি মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার জৈন এদিনও জানিয়ে দিয়েছেন বিড়ি শ্রমিকদের ২৪০ টাকা মজুরি দেওয়া কোনও মতেই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘তা ছাড়া এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এ রকম কোনও দাবি আমাদের কাছে আসেনি। আর রাজ্য স্তরে এই মজুরি নিশ্চিত করতে হলে তা রাজ্য সরকারকে নির্দেশনামা জারি করতে হবে।’’
ঋতব্রত এদিনের সভায় বলেন, “বিড়ি শ্রমিকদের আবাসন প্রকল্প বন্ধ। পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে না। এগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা। বিড়ি শ্রমিক হাসপাতালগুলির বেহাল অবস্থা। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার বিড়ি থেকে রাজস্ব আদায় করছেন বছরে প্রায় ১১২৪ কোটি টাকা।”এদিন ঋতব্রত স্থানীয় বিড়ি মালিকদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “শ্রমিকদের বাঁধা বিড়ি থেকে ছাঁট কেটে নেওয়া চলবে না। প্রত্যেক বিড়ি শ্রমিক যাতে প্রভিডেন্ট ফান্ডের আওতাভুক্ত হন সে ব্যবস্থা করতে হবে। নচেত প্রতিটি প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করবে তৃণমূল। প্রভিডেন্ট ফান্ডের জঙ্গিপুর আঞ্চলিক যে অফিস বহরমপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেটা বহরমপুরেই থাক। জঙ্গিপুরে আর একটি অফিস চালু করতে হবে। ২৪০টাকা মজুরি চালুর দাবি পূরণ নিয়ে বিড়ি মালিকদের কোনও গড়িমসি মানা হবে না।”ঋতব্রত বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরদিঘিতে সভা করতে এসে বলে গিয়েছিলেন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি করার কথা। আমরা সারা বাংলা তৃণমূল বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দাবি করছি ২৪০ টাকা মজুরি দিতে হবে বিড়ি শ্রমিকদের প্রতি হাজার বিড়ি বাঁধাইয়ের জন্য।’’