খুনের অভিযোগে ধৃত সুশান্ত চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
ভরসন্ধ্যায় বহরমপুরের গোরাবাজারে ছাত্রী খুনের ঘটনায় ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে প্রণয়ঘটিত সম্পর্কে টানাপড়েনের তত্ত্ব। পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে সোমবার রাতেই গ্রেফতার করেছে। ধৃত সুশান্ত মালদহের বলরামপুরের বাসিন্দা। সে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করত মালদহের গৌড় কলেজে। বিহারের পটনাতেও যাতায়াত ছিল। তবে সেখানে সে ঠিক কী করত তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
নিহত সুতপা চৌধুরী মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা। বছর বারো আগে মালদহের ইংরেজবাজার পুর এলাকার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করে সুতপার পরিবার। সুশান্ত পড়াশোনার জন্য থাকত তার পিসি শান্তিরানি চৌধুরীর বাড়িতে। মালদহের গৌড় কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র ছিল সুশান্ত। তার পিসির বাড়ি সুতপার বাড়ির কাছেই। সুশান্তের পরিবারের দাবি, সেই সূত্রেই সুশান্ত এবং সুতপার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সুশান্তের সঙ্গে সুতপার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন শান্তিরানি।
সুশান্তের কাকিমা পুতুল চৌধুরী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘সুতপার সঙ্গে সুশান্তের সম্পর্ক ছিল। সুশান্ত সুতপাকে ভালবাসত। আমি জানি, ওদের সম্পর্কটা বছর দুয়েকের। কিন্তু ওর পরিবারের লোকজন সুশান্তের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়নি। এমনকি, ক্লাবের ছেলেদের দিয়ে মারধর করিয়েছে। সুশান্তের ল্যাপটপও কেড়ে নিয়েছিল। গতকাল খবরটা পাওয়ার পর থেকে, আমরা ভাবতে পারছি না কী ভাবে এমন কাণ্ড ঘটল। সুশান্ত পিসির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। ছেলেটার জীবনটাও তো নষ্ট হয়ে গেল।’’
সুশান্তের বাবা নিখিল চৌধুরী পেশায় পুলিশ কনস্টেবল। তিনি নিউ জলপাইগুড়িতে কর্মরত। তাঁর তিন ছেলে। সুশান্ত মেজ। তার পরিবারের দাবি, বিহার থেকে সপ্তাহখানেক আগে সে বাড়ি ফিরেছিল। সোমবার পটনা যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোয়। জানা গিয়েছে, সুশান্ত বাড়ির সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ রাখত না। তার দাদা শুভজিৎ চৌধুরীর কথায়, ‘‘প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও সুতপা ভাইয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেছিল বেশ কিছু দিন ধরে। ভাই মানসিক ভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছিল।’’
সুশান্তের এ হেন আচরণে হতবাক তার শিক্ষক সুপ্রিয় মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আপাত শান্ত সুশান্ত এমন নৃশংস ঘটনা ঘটাতে পারে এটা ভাবতেও পারিনি। শুনে এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না।’’