ফাইল চিত্র।
বহরমপুরে কলেজ ছাত্রীকে খুনের ঘটনার তদন্তে আর দিন তিনেকের মধ্যেই পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দিতে পারে বলে একাধিক সূত্র দাবি করেছে। যদিও আততায়ী গ্রেফতার হওয়ার পরে দু’মাস কেটে গেলেও মালদহের বাসিন্দা বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর খুনে এখনও চার্জশিট জমা না পড়ায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন সুতপার বাবা, মা। ফোনে সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী এ দিন বলেন, “আমি বহরমপুর থানায় ফোন করে চার্জশিটের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম। বলা হয়েছে খুব তাড়াতাড়ি চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। পুলিশ সুপারও বলেছেন চলতি সপ্তাহেই চার্জশিট জমা দেবে পুলিশ।”
বৃহস্পতি কিংবা শুক্রবারের মধ্যেই ছাত্রী খুনের চার্জশিট জমা পড়বে বলে বহরমপুর থানা সূত্রেও জানা যায়। তদন্তের সঙ্গে জড়িত এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘সুতপা খুনে এই সপ্তাহেই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।’’
আজ, বুধবার ফের ওই খুনের মামলার শুনানি হবে বহরমপুরে মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে। স্বাধীনবাবু বলেন, “আততায়ী ধরা পড়েছে সঙ্গে সঙ্গে। তদন্তও শেষ হয়েছে বলে জানি। তার পরেও চার্জশিট জমা পড়তে এত দেরি হচ্ছে দেখে অবাকই হচ্ছি। আমরা চাইছি বিচারপর্ব তাড়াতাড়ি শুরু হোক। তবে বহরমপুর থানার পুলিশের উপর আমাদের সব রকম আস্থা আছে।”
এই ধরনের বিশেষ মামলায় সাধারণত খোদ পুলিশ সুপারের নজরে তদন্ত হয়। সেই তদন্তে কোনও ফাঁকফোঁকর রাখতে চাইছে না পুলিশ। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক তদন্ত শেষ করে পুলিশ সুপারের কাছে সেই রিপোর্ট পেশ করেন। পুলিশ সুপার এরপর অনুমতি দিলে তবেই চার্জশিট জমা পড়ে আদালতে। তদন্তে ফাঁক থাকলে সেই ফাঁক পূরণ করে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
এর আগে মালদহ থেকে বহরমপুরে এসে সুতপার বাবা সুতপা ও সুশান্তের এক জন ‘কমন’ বন্ধুর কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড জমা দিয়েছিলেন। সেই বন্ধুর বিষয়েও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেছে কি না, তা জানতেও এ দিন উদগ্রীব ছিলেন স্বাধীন।
যদিও সূত্রের দাবি, খুনের ধারা দিয়েই চার্জশিট জমা দিচ্ছে পুলিশ, তবে অন্য কোনও ব্যক্তি এই খুনের সঙ্গে যুক্ত কি না তদন্তে তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেই পুলিশের দাবি। তবে পুলিশে আস্থা দেখিয়ে স্বাধীন এ দিন ফের দাবি করেন “ওই খুনি ছেলের ফাঁসি চাই আমরা।” তা নাহলে সপরিবারে আত্মহত্যারও হুমকি দিয়েছেন স্বাধীন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চক্রবর্তী বলেন, “আইনের রাস্তায় অভিযোগকারীকে সঠিক বিচার পেতে আমি সবরকম ভাবে লড়াই করব।”
২ মে ভর সন্ধ্যায় গোরাবাজারের পুরনো কাত্যায়নীর গলিতে এক মেস বাড়ির সামনে সুতপাকে কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করে মালদহের আর এক বাসিন্দা সুশান্ত চৌধুরী। খুন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ।