রইল গোঁজ, স্বস্তি নেই শাসক দলে

শেষ দিন এসে গেল। কিন্তু এখনও গোঁজ ঘাড়ে নিয়েই ঘুরতে হচ্ছে নদিয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি বাণীকুমার রায়ের স্ত্রী রীনা রায়কে। শুক্রবার পর্যন্ত জেলা পরিষদের ৪১ নম্বর আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি জেলা যুব তৃনমূল সহ-সভাপতি তপন দাস।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি

শেষ দিন এসে গেল। কিন্তু এখনও গোঁজ ঘাড়ে নিয়েই ঘুরতে হচ্ছে নদিয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি বাণীকুমার রায়ের স্ত্রী রীনা রায়কে। শুক্রবার পর্যন্ত জেলা পরিষদের ৪১ নম্বর আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি জেলা যুব তৃনমূল সহ-সভাপতি তপন দাস। আজ, শনিবারও তা না করলে তাঁকে হয়তো বহিষ্কার করবে দল। কিন্তু গলায় কাঁটা নিয়েই ভোটে যেতে হবে রীনাকে।

Advertisement

শুধু তো রীনা নন, দুই জেলায় তৃণমূলের বেশ কিছু প্রার্থীই গোঁজের গোঁতায় অতিষ্ঠ। যখন বিরোধী দলের প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর ভূরি-ভূরি অভিযোগ উঠছে শাসক দলের বিরুদ্ধে, নিজেদের কিছু নেতার ক্ষেত্রে তারা কার্যত অসহায়। বাণীর প্রতাপ খর্ব করার জন্য যেমন রীনাকে হারাতে আদাজল খেয়ে লেগেছেন দলেরই একাংশ, তেমনটা ঘটছে আরও কিছু আসনে— জেলা পরিষদ স্তর থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যন্ত। মুর্শিদাবাদে জেলা পরিষদের ৭০টি আসনে শাসক দলের অতিরিক্ত প্রার্থী নেই ঠিকই। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৫ জন অতিরিক্ত প্রার্থী। গ্রাম পঞ্চায়েতে অতিরিক্ত ৩১৩ জন। এঁদের কিছু হয়তো আজ, শনিবার শেষ লগ্নে মনোনয়ন ফিরিয়ে নেবেন। তার জন্য বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে কসুর করছে না তৃণমূল। এঁদের সবাই যে নিরস্ত হবেন না, নেতৃত্ব ভালই জানেন।

নদিয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ৩৪২টি বাড়তি মনোনয়ন এখনও রয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিতে বাড়তি রয়েছে ৬৬টি। জেলা পরিষদেও দু’টি আসনে তৃণমূলের একাধিক প্রার্থী। সবচেয়ে দুরবস্থা শান্তিপুর, কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট-২ ব্লকে। তিন ব্লকেই গোষ্ঠী-কোন্দলে জেরবার তৃণমূল। শান্তিপুরে পঞ্চায়েত স্তরে ১০২ জন অতিরিক্ত প্রার্থী রয়েছেন, পঞ্চায়েত সমিতিতে রয়েছেন ২৭ জন। কৃষ্ণগঞ্জে পঞ্চায়েত স্তরে আছেন ২৮ জন। রানাঘাট ২ ব্লকে পঞ্চায়েতের ৪৩টি আসনে এবং পঞ্চায়েত সমিতির সাতটি আসনে একই অবস্থা। এই হিসেবের বাইরেও রয়েছেন বেশ কিছু প্রার্থী, যাঁরা তৃণমূলের নামোল্লেখ না করে স্রেফ নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেছেন এবং এ দিন পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করেননি। বিশেষ করে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে এঁদের রমরমা। এঁদের কারও-কারও এলাকায় ভালই জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফলে, তাঁরা যে নিজেদের নাক কেটে তৃণমূলের যাত্রাভঙ্গ করতে পারেন, সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

তৃণমূল পথের কাঁটা দূর করতে গোঁজ-সাফাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “অতিরিক্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছি। এর পরেও যদি কেউ প্রার্থী থেকে যান, জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।” নদিয়া জেলা সভাপতি তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেছেন, তপন দাস মনোনয়ন না ফেরালে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। তাও তিনি বলছেন, “কোনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নেই। ভালবেসে অনেকে দাঁড়াতে চেয়েছেন। তবে কোনও সমস্যা থাকবে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement