—প্রতীকী ছবি।
বিড়ি শিল্পাঞ্চলে রাজনীতিতে বিড়ি মালিকদের হস্তক্ষেপ থাকলেও সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দেখা যায়নি ২০০৬ সালেও। কংগ্রেস বা পরিচিত কেউ প্রার্থী হলে তাদের ভোটে জিততে সাহায্য করতেন তারা। অর্থ জোগাতেন আর নিজের কারখানার শ্রমিক ও মুন্সিদের দিয়ে ভোট পাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করতেন। এর বেশি কিছু নয়। খলিলুর রহমান, জাকির হোসেন, সাজাহান বিশ্বাস, ইমানি বিশ্বাস, বাবর আলি বিশ্বাস সহ প্রায় সব বিড়ি মালিকেরাই কংগ্রেস ঘরানার সমর্থক ছিলেন বরাবরই। ২০০৪ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় যখন জঙ্গিপুর লোকসভায় প্রার্থী হন তখন মূলত তাঁর এলাকা ছিল জঙ্গিপুর মহকুমার বিধানসভাগুলি। জঙ্গিপুরে বিড়ি শ্রমিকদের ব্যাপক সংখ্যা দেখে তিনি সরাসরি দ্বারস্থ হন বিড়ি মালিকদের। কারণ প্রতিটি বিড়ি কারখানার সঙ্গে যুক্ত লক্ষাধিক শ্রমিক ও মুন্সি (যারা বিড়ি কারখানাগুলির মূল স্তম্ভ)। মালিকের নির্দেশ এখনও তাদের কাছে শেষ কথা। প্রায় বেশির ভাগ বিড়ি কারখানার মালিক প্রণববাবুর হয়ে ভোটের প্রচারে নেমে পড়েন। কেউ পরোক্ষে, কেউ সরাসরি। আগে বিড়ি মালিকেরা কংগ্রেসের ভোট প্রার্থীদের বাইরে থেকে সমর্থন করলেও তা সরাসরি সামনে আসেনি। প্রণববাবু জয়ী হন মাত্র ৩৭ হাজার ভোটে প্রথম বার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন প্রণববাবু। বাড়তে থাকে বিড়ি মালিকদের সঙ্গে তাঁর সখ্য। বিড়ি মালিকদের সমস্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বাড়ে প্রণববাবুর। সেই সঙ্গে বিড়ি মহল্লার সংযোগ বাড়ে তামাম কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে। ২০০৯ সালে প্রণববাবুর জয়ের ব্যবধানও বেড়ে দাঁড়ায় ১.৩৭ লক্ষতে।
২০১১ সালেই প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস বিড়ি মহল্লা সুতি থেকে প্রার্থী করে বিড়ি মালিক ইমানি বিশ্বাসকে। প্রায় ১৭ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হন ইমানি। বলা যায় সেই শুরু সরাসরি রাজনীতিতে যোগদান বিড়ি মালিকদের। তার আগেও বিড়ির মালিকেরা যে ভোটে দাঁড়াননি তা নয়। যেমন খলিলুরের বাবা নুর মহম্মদ। কিন্তু জিততে পারেননি। রাজনীতিতেও আর সেভাবে অংশ নেননি।বেশিদিন ইমানি থাকেননি কংগ্রেসে। প্রণববাবু জঙ্গিপুর ছাড়তেই কংগ্রেস ছেড়ে ইমানিকে তৃণমূলে নিয়ে আসেন তৎকালীন তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। ২০১৬ সালে সুতি থেকেই বিধানসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হন ইমানি। হেরে যান কংগ্রেসের কাছে। দুই বিড়ি মালিক কংগ্রেসকে সাহায্য করাতেই হারেন ইমানি।
সেই থেকে একে একে আরও বিড়ি মালিক রাজনীতিতে সরাসরি যোগ দেন। রাজনীতিকেরা ও বিড়ি মালিকেরা বোঝেন একে অপরের সাহায্য দরকার। (চলবে)