বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের জন্য বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম ভেঙে ‘হেল্প ডেস্ক’ বসানোর অভিযোগ উঠল এবিভিপি-র বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি ইউনিট সভাপতি অনুভব হুইয়ের দাবি, দিন দুয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টিএমসিপি এবং এবিভিপির বৈঠক হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, নির্দিষ্ট কিছু জায়গাতেই রাজনৈতিক পোস্টার, ব্যানার, ফ্লেক্স লাগানো যাবে। ছাত্র ভর্তির সময় কোনও ‘হেল্প ডেস্ক’ বসানো যাবে না। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে বুধবার যে হলে কাউন্সেলিং হচ্ছিল, তার বাইরে পতাকা টাঙিয়েছে এবিভিপি। ‘হেল্প ডেস্ক’ও বসিয়েছে।
টিএমসিপি-র অভিযোগ, কিছু দিন ধরেই কর্তৃপক্ষ এবিভিপি-কে মদত দিচ্ছেন। ‘হেল্প ডেস্ক’ নিয়ে উপাচার্যের কাছে তারা অভিযোগও জানিয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনপুর ক্যাম্পাসে এবিভিপি-র ৭১তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে উপাচার্য ধরণীধর পাত্রও হাজির ছিলেন। সেই ছবিও প্রচারিত হয়েছে। এতে ছাত্রছাত্রীদের কাছে ভুল বার্তা গিয়েছে বলে টিএমসিপি, এমনকি শিক্ষকদেরও একাংশ মনে করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্রের দাবি, বছরখানেক আগে মোহনপুর ক্যাম্পাসে ছাত্র আন্দোলনের সময়ে উপাচার্য তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের থেকে যথেষ্ট সাহায্য পেয়েছিলেন। ‘চলো পাল্টাই বিসিকেভি’ স্লোগান সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে তৃণমূলের স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীরা ছাত্রীদের হস্টেলে হামলা করে বলেও অভিযোগ। কল্যাণী ও হরিণঘাটার তৃণমূল নেতারা কিছু দিন আগে পর্যন্তও ধরণীধরকে ‘নিজেদের লোক’ বলেই মনে করতেন।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের অনেকেরই অভিযোগ, লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই উপাচার্য এবিভিপি-কে নানা ভাবে সাহায্য করছেন। শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্দিষ্ট একটি ছাত্র সংগঠনের সভায় গিয়ে ভুল করেছেন। এতে মনে হচ্ছে, তিনি ওই সংগঠনের প্রতি আনুগত্য দেখাচ্ছেন। এবিভিপি-র বিসিকেভি ইউনিট আহ্বায়ক মুকুল সমাদ্দারের দাবি, ‘‘মঙ্গলবার অনুষ্ঠানে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে আলোচনা ছিল। শিক্ষামূলক বিষয় ছিল। সেখানে স্যর আসতে পারবেন না কেন?’’ উপাচার্যও বলেন, ‘‘আমায় ছেলেরা জানিয়েছিল, বঙ্কিমকে নিয়ে আলোচনাসভা হবে। আমি বঙ্কিমের সাহিত্যকর্মের ভক্ত। তাই গিয়েছিলাম। তবে ওখানে গিয়ে যখন দেখলাম রাজনৈতিক কথা হচ্ছে, দশ মিনিটের মধ্যেই চলে এসেছি।’’
টিএমসিপি নেতা অনুভব বলেন, ‘‘স্যর কোথায় যাবেন, এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে বুধবার যে ভাবে এবিভিপি ‘হেল্প ডেস্ক’ খুলল, তাতে আমাদের আপত্তি রয়েছে।’’ এবিভিপি-র মুকুলের দাবি, ‘‘আমরা ওখানে ছাত্র হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়নি। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে আমরা উত্তর দিয়েছি মাত্র।’’ আর উপাচার্যের দাবি, ‘‘আমি গিয়ে কোনও ‘হেল্প ডেস্ক’ দেখিনি। অভিযোগ হলে খতিয়ে দেখব।’’