মোহিনীর পরনে ছিল লাল টুকটুকে নতুন শাড়ি। গায়ে চেপেছিল লাল মখমলের চাদরও। নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ রকমের ফল, পাঁচ রকম মিষ্টি, লুচি-পায়েস-সহ তেরো রকমের বাহারি পদ। সোমবার এই আয়োজনই হয়েছিল নদিয়ার বগুলার মিলননগর পাগলা বাবা আশ্রমের ‘হলিস্ট্রিয়ান’ প্রজাতির ৯ মাসের সন্তানসম্ভবা গাভি মোহিনীর সাধ অনুষ্ঠানে। আর সেই অনুষ্ঠানে পাত পেড়ে খেলেন আমন্ত্রিত আড়াইশো মানুষ। যে ভাবে এক জন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর সাধভক্ষণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, তার থেকে কিছু কম ধুমধাম হয়নি মোহিনীর সাধ অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে পাগলা বাবা আশ্রম চত্বরে ছোটখাটো মেলাও বসেছিল।
এই দিন মোহিনীর পরনে ছিল লাল টুকটুকে নতুন শাড়ি। গায়ে চেপেছিল লাল মখমলের চাদরও। শিংয়ে ছিল ফিতে, পায়ে নূপুর। রীতি অনুযায়ী সমস্ত আচার মেনেই মোহিনীর সাধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। রবিবারের অনুষ্ঠানে মোহিনীর গায়ে সাধের সামগ্রী তুলে দিতেও দেখা গিয়েছিল এলাকার মহিলাদের। মেনুতে ছিল লুচি-মিষ্টি-পোলাও-পায়েস মিলিয়ে প্রায় ১৩ রকমের পদ। সারাদিন হরেক রকম খাবার এবং তার জন্য আনা বিভিন্ন উপহার পেয়ে শিং নেড়েছে মোহিনীও। সোমবার আশ্রমের আবাসিকদের উদ্যোগে দিনভর মোহিনীর সাধভক্ষণের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। সকাল থেকেই আশ্রমে ভিড় করেছিলেন আমন্ত্রিত উৎসাহী মানুষেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোহিনী ছোট থেকেই আশ্রমে বড় হচ্ছে। আশ্রমের প্রধান প্রমথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাড়ির বউদের যে ভাবে সাধ দেওয়া হয় সে ভাবেই জাঁকজমজ করেই মোহিনীর সাধের অনুষ্ঠান হয়েছে।’’
সাধের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ঝরনা মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমি নিজেও একটি শাড়ি নিয়ে এসেছি। প্রায় আড়াইশো লোকের খাওয়ার বন্দোবস্ত হয়েছিল অনুষ্ঠানে।’’
এই ভাবে জাঁকজমক করে গাভির সাধভক্ষণের অনুষ্ঠান তাঁরা কখনও চাক্ষুষ করেননি বলেই দাবি বগুলাবাসীর। এমন অভিনব সাধভক্ষণ অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রশংসা করছে অনেক পশুপ্রেমী সংগঠনও। রানাঘাট পশু কল্যাণ সমিতির সভাপতি আশিস প্রধান বলেন, ‘‘গৃহপালিত পশুদের গুরুত্ব কোন অংশে মানুষের থেকে কম নয়। তাদের প্রতি এই ভালবাসা অবশ্যই তাদের প্রাপ্য।’’