ভোরে কড়া নাড়ছে ‘বেবি’

কেউ কাকভোরে মায়ের আঁচল ধরে টানাটানি করছে, কেউ আবার বাবা-কাকার দরজায় গিয়ে নাগাড়ে কড়া নাড়ছে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৯
Share:

শীত সকালে গা ঘামানো। নিজস্ব চিত্র

ঢলঢলে জার্সির হাতায় গলে গিয়েছে গলা। পায়ে জুতো, বগলে বল। ভোর পাঁচটা নাগাদ চাচা হামিদুল শেখের দরজায় গিয়ে কড়া নাড়ছে আড়াই বছরের আরিফ শেখ। যে ছেলেকে সকালবেলা স্কুল যাওয়ার জন্য টেনে তুলতে হিমশিম খেতে হত মা’কে, সেই বছর পাঁচেকের নাসিম শেখ এখন ভোর পাঁচটার আগেই বিছানা থেকে তড়াক করে উঠে টেনে তুলছে মা রেশমা বিবিকে।

Advertisement

না অন্য কোনও কারণ নয়, ফুটবলের অনুশীলনের জন্য ভোরবেলায় এখন অভিভাবকদের টেনে তুলছে ইসলামপুরের কচিকাঁচারা। কেউ কাকভোরে মায়ের আঁচল ধরে টানাটানি করছে, কেউ আবার বাবা-কাকার দরজায় গিয়ে নাগাড়ে কড়া নাড়ছে।

ইসলামপুরের নসিয়ত পাড়ার বাসিন্দা হামিদুল শেখ বলছেন, ‘‘এ বছর ভাইপো আরিফ বেবি লিগ খেলবে। প্রথম দিকে সকালবেলা অনুশীলনের জন্য বিছানা থেকে তুলতে গিয়ে ওর মা এবং আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হত। আর এখন কখনও ভোর সাড়ে চারটে বা পাঁচটায় নিজেই তৈরি হয়ে দরজায় এসে নাগাড়ে কড়া নাড়তে থাকে।"

Advertisement

আরিফের মা আফিনা বিবি বলছেন, ‘‘ভোরবেলায় ফুটবলের অনুশীলন এখন ওদের কাছে নেশার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই সময়ে ঘুমটা খুব চেপে আসে বলে আমারও খুব কষ্ট হয় বিছানা ছাড়াতে, কিন্তু এখন ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ বাধ্য হই ছেলের জন্য বিছানা ছাড়তে। আমার একটু দেরি হলে নিজেই জার্সিতে গলিয়ে দেবে মাথা, এ পায়ের জুতো ও পায়ে পরে নেবে। উপায় নেই দেখে এখন বাধ্য হয়ে উঠে পড়ি।’’ আরিফের প্রতিবেশী নাসিম শেখকে নিয়েও বিপাকে পরিবার। নাসিমের মা রেশমা বিবির দাবি, ‘‘ ছেলেকে মাস খানেক আগেও সকালে বিছানা ছাড়াতে গিয়ে হিমশিম খেতাম। সে এখন ভোরে মাঠে যাওয়ার জন্য নাজেহাল করছে। ’’ বেবি লিগ ফুটবল প্রোমোটিং কমিটির অন্যতম কোচ ধীমান দাস বলছেন, ‘‘এই সময় শিশুদের ফিটনেস ট্রেনিং হয় না। বলের সঙ্গে তাদের পায়ের সংযোগ বাড়ানোর জন্য অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছি। ওরা বাড়িতেও যেমন পরিবারের সদস্যদের অতিষ্ট করে তুলছে, মাঠে এসেও আমাদের সেই একই ভাবে ব্যতিব্যস্ত করছে। কিন্তু এই ইচ্ছেটাই আসল। ভাল লাগছে সে জন্যই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement