কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখলেন ‘আবাস যোজনা’র উপভোক্তাদের বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
আবাস নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। এই প্রেক্ষিতে নদিয়ায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি সফর করলেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল। একটি বাড়িতে গিয়ে গৃহকর্ত্রীকে গিয়ে মন্ত্রীর সটান প্রশ্ন, ‘‘দেড় বছরের পুরনো বাড়ির দেওয়ালের লেখা এত চকচক করে?’’
নদিয়ার কৃষ্ণনগরের শ্যামপুরের বাসিন্দা পরিমল ব্রহ্মা ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’য় বাড়ি পেয়েছেন ২০২১ সালে। শুক্রবার আচমকা তাঁর বাড়িতে হাজির হলেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রী। বাড়ির চার দিক ঘুরে দেখে মন্ত্রীর চোখ গেল দেওয়ালের এক জায়গায়। সেখানে লেখা, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’। দেখেই থমকালেন মন্ত্রী। গৃহকর্ত্রীর কাছে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কবে বাড়ি পেয়েছেন?’’ খানিক ক্ষণ পর উত্তর এল, ‘বছর দেড়েক আগে।’ এর পরই কপিলের প্রশ্ন, ‘‘এ লেখা কবে লেখা হয়েছে?’’ উপভোক্তার উত্তরের অপেক্ষা করেননি আর। জেলা প্রশাসনের কর্তারা প্রায় একই সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘দেড় বছর আগে’। উত্তর শুনেই হাসি খেলে গেল মন্ত্রীর মুখে। বললেন, ‘‘দেড় বছরের পুরনো লেখা এত চকচক করে?’’
যদিও প্রশাসনের কর্তারা ব্যাখ্যা দিতে থাকেন, কী ভাবে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ লেখা ফলক এখনও নতুন আছে। এর পর মেজাজ হারাতে দেখাতে গেল মন্ত্রীকে। গম্ভীর স্বরে বললেন, ‘‘আমি সব বুঝি। যেখানে বলার বলে দেব।’’
শুক্রবার দিনভর কৃষ্ণনগর-১ এবং ২ নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘুরে ঘুরে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা প্রাপকদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মন্ত্রীকে দুয়ারে পেয়ে অভিযোগের ফুলঝুরি ছোটালেন বিক্ষুব্ধরা। সেই নালিশ হল জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সামনেই। বেশির ভাগ জায়গায় প্রশাসনিক কর্তারা নীরব ছিলেন।
শুক্রবার থেকে ২ দিনের কর্মসূচিতে রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সকালে নদিয়ার প্রশাসনিক বৈঠক ডাকেন তিনি। তবে আলোচনায় জেলাশাসক ছিলেন না। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নদিয়ার জেলাশাসক এই মুহূর্তে ছুটিতে আছেন। তবে এ নিয়ে মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের সচিবকে এ নিয়ে অবশ্য কৈফিয়ৎ তলব করেছেন মন্ত্রী। শনিবার সকাল ৮টা থেকে ঠাসা দলীয় কর্মসূচি রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। রবিবার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের একাধিক প্রকল্পের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিশেষ রিপোর্ট পেশ করবেন বলে খবর। যদিও এতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক দল। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘যে কেউ আসতে পারেন রাজ্যে। তার জন্য আলাদা করে বিশেষ প্রস্তুতির কোনও প্রয়োজন নেই।’’