কর্মবিরতিতে শামিল আশা কর্মীরা। শুক্রবার হরিণঘাটায়। ছবি: সুদেব দাস
পাঁচ দফা দাবিতে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্ট কাল কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়ন। নদিয়াতেও বিভিন্ন ব্লকে এ দিন কর্মবিরতিতে শামিল হন সংগঠনের সদস্যেরা। তার জেরে মূলত গ্রামীণ এলাকায় প্রসূতি ও শিশুদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় প্রভাব পড়ছে বলে চিকিৎসক ও প্রশাসনের আধিকারিকদের আশঙ্কা।
মাসিক ভাতা বৃদ্ধি, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল দেওয়া, ইনসেন্টিভের টাকা ভাগে ভাগে দেওয়ার পরিবর্তে বকেয়া টাকার দাবি, অতিরিক্ত কাজের জন্য উপযুক্ত ভাতা, পালস পোলিয়ো ও ফাইলেরিয়ার মতো কাজের জন্য ভাতাবৃদ্ধি ও নিয়মিত তা দেওয়ার দাবিতে রাজ্য জুড়ে এই কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রসূতিদের স্বাস্থ্যের উপর খেয়াল রাখা, তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, নবজাতকের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা, টিকাকরণ ইত্যাদি কাজগুলি করতে হয় তাঁদের। সেজন্য তাঁরা প্রতি মাসে ভাতা পান।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে নদিয়ায় প্রায় তিন হাজার আশা কর্মী রয়েছেন। তাঁদের একটা বড় অংশ এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আবেদন জানিয়ে কাজ হয়নি। তাই কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে।
এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হরিণঘাটা গ্রামীণ হাসপাতালে জমায়েত হন আশা কর্মীদের একটা বড় অংশ। সেখানে ছোট সভা করার পর মিছিল বার করা হয়। জাগুলি চৌমাথা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা প্রদক্ষিণ করে মিছিল। তেহট্ট এবং করিমপুরেও কর্মবিরতিতে শামিল হন আশা কর্মীরা। সংগঠনের নদিয়া জেলা সম্পাদক মাধুরী পাল দত্ত বলেন, "প্রসূতি ও শিশুরা সমস্যায় পড়ুক, তা চাই না। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমরা দাবি-দাওয়ার কথা ব্লক, জেলা ও স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়ে এসেছি। প্রতি বারই শুধু প্রতিশ্রুতি মিলেছে। তাই কর্মবিরতিতে শামিল হতে বাধ্য হয়েছি।" এ প্রসঙ্গে জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, "স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে সমস্যা যে হবে না, তা নয়। আমরা আশা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলব। আশা করছি, বৃহত্তর স্বার্থে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।"