জিয়াগঞ্জে একটি স্কুল সংলগ্ন মাঠে চলছে বাছাই পর্ব। নিজস্ব চিত্র
তাঁর গলায় সুরের মায়া খেলে। সে কথা জানে আপামর ভারত। সেই তিনিই গেয়েছিলেন, ‘‘শাপলা ফুলের পোকা, ভেজা শালিকের ডানা, ঘাসজমি থমথমে, ধূসর সামিয়ানা।... নাছোড়বান্দা স্মৃতি সাদা আর কালো জুড়ে, অপুর পায়ের ছাপ ডুবছে বাঁশির সুরে।’’
যেখানে বড় হওয়া, সেই জিয়াগঞ্জের প্রতি তাঁর টান থাকবে না, তাই তেমনটা হয় না। হয়ওনি। যখনই সুযোগ পান জিয়াগঞ্জে চলে আসেন, মাস কয়েক আগে জিয়াগঞ্জে নিজের স্কুল রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরের পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। অরিজিৎ একটি রেস্তোরাঁ নিয়েও উদ্যোগী হয়েছেন। যেখানে মাত্র ৩০ টাকায় নানা রকমের পেটভরা খাবার পাওয়া যাবে।
এ বার নিজের জেলায় খেলাধুলোর মানোন্নয়ন ও নতুন প্রতিভার সন্ধানে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, সম্প্রতি তাঁর উদ্যোগে রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরে ক্রিকেট ও ফুটবলের বাছাই পর্ব হয়। পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা তাতে যোগ দেয়। ওই স্কুলে ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল খেলোয়াড়দের বাছাই পর্বও শুরু হবে। চূড়ান্ত বাছাইয়ে মনোনীত খেলোয়াড়েরা পেশাদার প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে। বাছাই পর্ব থেকে অনুশীলন পর্ব—পুরোটাই দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে অরিজিতের নিজের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ইতিমধ্যেই রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরের খেলার মাঠে জাতীয় স্তরের একজন কিউরেটরকে দিয়ে পিচ এবং আউটফিল্ড তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেই বাংলার সিনিয়র ক্রিকেট দলের হয়ে রনজি ট্রফি খেলেছেন কুনাল বাজপেয়ী, সোহম ঘোষেরা। আমদাবাদে সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় গেমসে কেরলকে ৫-০ উড়িয়ে ফুটবলে সোনা জিতেছে বাংলার ছেলেরা। সেই দলে ছিলেন এই জেলারই বাসিন্দা সৌগত হাঁসদা।
এই আবহে জেলার ‘ভূমিপূত্র’ অরিজিতের এমন ইতিবাচক ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করছেন সকলেই। জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা অনিমেষ মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলায় প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু ফুটবল, ক্রিকেটের ভাল অ্যাকাডেমি নেই। যেগুলি আছে সেখানে প্রশিক্ষণ নেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য অনেকেরই নেই। এই উদ্যোগে অনেক প্রতিভা উঠে আসবে।’’ জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের পুরপ্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুরসভার তরফে যে কোনও সাহায্য করে আমরা প্রস্তুত।’’ মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘প্রশাসন সব দিক থেকে তাঁকে সাহায্য করবে।’’