মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাজন্যা হালদার। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। সোমবার বিকেলে নদিয়ার রানাঘাটে টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, যাদবপুর ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী রাজন্যা হালদারদের সফরের ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের পরিবার। আনিসের পরিবারের পাঁচ সদস্য-সহ নয় জনের ওই প্রতিনিধি দল মৃতের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলে। দুই প্রতিনিধি দলকেই ধন্যবাদ জানিয়েছে মৃতের পরিবার। মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজন্যা বলেন, ‘‘আমরা জানতাম না যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ভাবে নিয়মিত র্যা গিং চলে! যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিয়নের দায়িত্বে রয়েছে বাম সমর্থিত সংগঠন। তারা যে এত নৃশংস, অত্যাচারী সেটা কল্পনা করা যায় না।’’
আনিসের পরিবারের সদস্যেরা রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে মৃত ছাত্রের জন্য ‘ইনসাফ’ (বিচার) দাবি করেন। আনিসের দাদা শামসুদ্দিন খান বলেন, ‘‘আমার ভাই মারা যাওয়ার পরে দু’জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছিল। কিন্তু মাত্র ১৪ দিনের মাথায় তারা ছাড় পেয়ে যায়। আমরা আজও ইনসাফ পাইনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা চাই যে ভাইটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে গিয়ে প্রাণ হারাল, সেখানকার অভিযুক্তরা যেন অন্তত সাজা পায়।’’ আনিসের দিদি সাগিরা বিবি আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই যাদবপুরের মৃত পড়ুয়া এবং তাঁর ভাইয়ের ‘খুনে’ অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের শহিদ পরিবার আজ আরও একটি শহিদ পরিবারের সঙ্গে সমবেদনা ভাগ করে নিলাম। যে কোনও লড়াইয়ে আমরা এই পরিবারের পাশে আছি।’’
আনিসের দাদা, তিন দিদি এবং মামার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত পড়ুয়ার মা-বাবা। মৃতের মামা দুই প্রতিনিধি দলকেই ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘যারা আমাদের এই চরম দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ। আমরা যেন অতি দ্রুত ন্যায় বিচার পাই সে ব্যাপারে প্রত্যেককে সচেষ্ট হওয়ার অনুরোধ করব।’’
উল্লেখ্য, এর আগে মৃত পড়ুয়ার বাড়িতে গিয়েছেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। ওই দলে ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এছাড়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও মৃত পড়ুয়ার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাঁদের বাড়িতে যান।