নিজস্ব চিত্র
মমল্লপ্পুরম থেকে মায়াপুর বা নবদ্বীপের মাঝে কয়েকশো মাইলের ফারাক। কিন্ত যন্ত্রণার কাছে সে দূরত্ব আর কতটুকু। তাই কেরলে অবিবেচক কিছু মানুষ যখন ‘হস্তির নড়ান হস্তির চড়ান’ চিরকালের মতো থামিয়ে দিয়ে উল্লসিত হয়, তখন গোটা দেশের সঙ্গে সুদূর নবদ্বীপ ক্ষোভে বাক্যহারা হয়। পথে নেমে প্রতিবাদ জানায়। গর্ভস্থ সন্তানকে নিয়ে প্রাণ হারানো কেরলের হস্তিনী মায়ের মতো দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি যেন আর কোনও প্রাণীর না হয়, সেই দাবি নিয়েই বৃহস্পতিবার সরব হয়েছেন বিভিন্ন প্রান্তের পশুপ্রেমীরা।
বৃহস্পতিবার নবদ্বীপ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেনশনের সদস্যরা কেরলের হাতি হত্যার বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন। এ দিন বিকেলে সংগঠনের পক্ষ থেকে এক মৌন প্রতিবাদী মিছিল শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান করে। প্রতিবাদীদের হাতে ছিল পোস্টার। কালো পোশাক পরে তাঁরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানান। সংগঠনের তরফে চিরন্তন সরকার বলেন, “ভাবতে অবাক লাগে আমাদের দেশের অন্যতম শিক্ষিত রাজ্যে এই ঘটনা ঘটল। পশুপ্রেমী হিসাবে নয়, একজন মানুষ হিসেবেও ভীষণ লজ্জা। নিন্দার কোনও ভাষা নেই। তাই আমাদের প্রতিবাদ নীরব। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই দোষীদের।” মায়াপুরের ভীষণ মনখারাপ এই গর্ভবতী হাতির মৃত্যুতে। ইস্কনের যে কোনও উৎসবের সঙ্গে হাতির সম্পর্ক বহুকালের। এখন মায়াপুর ইস্কনে দু’টি পূর্ণবয়স্ক হাতি রয়েছে। বিষ্ণুপ্রিয়া এবং লক্ষীপ্রিয়া। জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাস বলেন, “ভাবতেই পারছি না এ ভাবে মানুষ মৃত্যুর আয়োজন করতে পারে।” তিনি জানান, মায়াপুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল গোলাপকলি নামের হাতিটি। ২০০০ সালের বন্যার পর পায়ে সংক্রমণ হয়ে হাতিটি মারা যায়। তার বছর চারেকের মাথায় অসম থেকে আসে একটি হাতি। এক বছর পর আরও একটি।