আবাসে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে ক্ষুব্ধ মালিহাটির মানুষ। নিজস্ব ছবি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে গ্রামে ‘ক্ষোভের’ আবহে মুর্শিদাবাদের মালাহাটি পঞ্চায়েতে গণইস্তফা। পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান-সহ মোট ১৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য একজোট হয়ে শুক্রবার ভরতপুর-২ ব্লকের বিডিওর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন। তাঁদের বক্তব্য, আবাস যোজনার তালিকা থেকে বহু মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। তা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ হয়েছে। ভবিষ্যতে জনরোষের মুখে পড়তে হতে পারে। নিরাপত্তার আশঙ্কা থেকেই তাঁরা পদত্যাগ করেছেন বলে পঞ্চায়েত সূত্রের দাবি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভরতপুর-২ ব্লকে আবাস প্লাসের সমীক্ষার সময় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বার বার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এলাকার মানুষ। ত্রিস্তরীয় সমীক্ষা শেষে চূড়ান্ত তালিকা ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসনের দফতরে জমা পড়া শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে দাবি, কোথাও ২০ শতাংশ, কোথাও ৩০ শতাংশের বেশি উপভোক্তার নাম বাদ গিয়েছে। তাতেই ক্ষুব্ধ এলাকার বহু মানুষ। সাদা মালিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পদত্যাগী ১৭ জন সদস্যের জমা দেওয়া ইস্তফাপত্রে কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, ‘‘আবাসের সমীক্ষার সময় প্রকৃত গরিব মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। যা আমাদের কাছে অত্যন্ত বেদনার। তাই পদত্যাগ করলাম আমরা।’’
মালিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সৈয়দ নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘‘যাঁরা ঘর পাওয়ার উপযুক্ত, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাড়ায় গেলে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে আমাদের। আত্মরক্ষার্থেই আমার পদত্যাগ করলাম। বাড়িতে পরিবার আছে। পাড়ার লোকজন ওদের ঘিরে ধরে মারলে কী হবে? আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে? জনরোষের ভয়েই পদত্যাগ করেছি।’’ উপপ্রধান মনিকা দাসও বলেন, ‘‘মাটির বাড়ি যাঁদের, তাঁরা ঘর পাচ্ছেন না। আর যাঁদের পাকা বাড়ি, তাঁরা দুটো-তিনটে করে পাচ্ছে। মানুষ কেন শুনবে? আমাদের তো পেটাবেই!’’
যদিও এই ইস্তফা নিয়ম মেনে হয়নি বলেই দাবি করেছেন বিডিও আশিস মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘ছুটির দিনে এই ধরনের সরকারি চিঠি গ্রহণ করা যায় না কি?’’
বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি শাখারাভ সরকার বলেন, ‘‘আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত একটা দল সাড়ে চার বছর লুটেপুটে খেয়ে এখন পালাতে চাইছে। মানুষ ছাড়বে না। মানুষ হিসেব বুঝে নেবে।’’ পাল্টা মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, ‘‘বিষয়টা নিয়ে দলীয় ভাবে আলোচনা হবে। তার পর যা বলার বলব।’’