Anganwadi

জরাজীর্ণ বাড়িতেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র

প্রথমে বেশ কয়েক বছর এলাকার একটি বাড়ির বৈঠক খানায় ওই কেন্দ্র চললেও পরবর্তী সময়ে বাড়ির মালিকের আপত্তিতে সেখান থেকে কেন্দ্র সরিয়ে অন্য একটি বাড়ির বারান্দায় শুরু করা হয়।

Advertisement

 সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩২
Share:

এই বাড়িতেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

কখনও কারও বৈঠকখানায়, আবার কখনও কারও বাড়ির বারান্দায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে কর্মী শ্যামলী দাসকে। প্রায় এক যুগ ধরে এখানে ওখানে প্রায় ‘ঘাড় ধাক্কা’ খেয়ে শেষ পর্যন্ত গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ভাঙাচোরা বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়েছে তাঁকে। আর এর ফলে ইসলামপুর থানার নলবাটা এলাকার রাধারপাড়া-২ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্রতিনিয়ত ৮১ জন মা ও শিশুকে নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

এখানেই শেষ নয়, মা ও শিশুদের জন্য রান্না চলছে পুরোপুরি ফাঁকা জায়গায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘সরকারের তরফে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে বিপজ্জনক ওই বাড়িতে শিশুদের ক্লাস চলছে।’’ যদিও ব্লক প্রশাসনের তরফে পাল্টা জানানো হয়েছে, ওই এলাকার সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসেননি কেন্দ্র তৈরির জন্য। সামান্য জায়গাও কেউ দান করেননি। ফলে বাড়ি তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

প্রায় এক যুগ আগে নলবাটা এলাকার রাধারপাড়ায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হয়। প্রথমে বেশ কয়েক বছর এলাকার একটি বাড়ির বৈঠক খানায় ওই কেন্দ্র চললেও পরবর্তী সময়ে বাড়ির মালিকের আপত্তিতে সেখান থেকে কেন্দ্র সরিয়ে অন্য একটি বাড়ির বারান্দায় শুরু করা হয়। এরপর সেই বাড়িতেও সমস্যা তৈরি হয়। ফলে বর্তমানে গ্রামের শেষে থাকা ডিপ টিউবওয়েলের পরিত্যক্ত ভাঙা বাড়িতেই শুরু হয়েছে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রের কর্মী শ্যামলী দাস বলছেন, ‘‘দু’টো জায়গা থেকেই প্রায় ঘাড় ধাক্কা খেয়ে শেষ পর্যন্ত এখানে আসতে বাধ্য হয়েছি। প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যেই আমাদের কাজ চালাতে হচ্ছে। একদিকে ভাঙা বাড়ি, অন্যদিকে গ্রাম থেকে বেশ কিছুটা দূরে। প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাকে।’’ সমস্যায় পড়েছেন ওই কেন্দ্রে আসা খুদে পড়ুয়া থেকে তাদের মায়েরাও। একেবারে গ্রামের শেষে বেশ কিছুটা ফাঁকা এলাকার মধ্যে তাদের প্রতিদিন আসতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। গ্রামের বাসিন্দা অভিভাবক লিপিকা খাতুন বলছেন, ‘‘একেবারে ফাঁকা এলাকায় বাচ্চাদের নিয়ে আমাদের পক্ষে যাতায়াত করাটা যেমন কষ্টের তেমনি বিপজ্জনক। ওই বাড়িতে খুদে পড়ুয়াদের লেখাপড়া করাটাও ঝুঁকির। সরকারের কাছে আবেদন রাখব বিষয়টি সুরাহা করার জন্য।’’ আরও এক মা শাহিনা খাতুন বলছেন, ‘‘যেখানে কচিকাঁচারা লেখাপড়া করছে সেই দেওয়াল যেকোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। তাছাড়া চারপাশে সাপখোপের আড্ডা। প্রয়োজনে এই বাড়িটির সংস্কার করে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করা হোক।’’ রানিনগর-১ ব্লকের সিডিপিও অলক কুমার দাস বলছেন, ‘‘ওই এলাকার মানুষ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি করার জন্য সামান্য জায়গা দিতে রাজি হননি। তাছাড়া এলাকায় কোনও সরকারি জমি বা খাস জমিও নেই। ফলে বাড়ি তৈরি করা সম্ভব হয়নি আমাদের পক্ষে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাব ডিপ-টিউবয়েলের বাড়িটি সংস্কার করার জন্য।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement