ফাইল চিত্র।
সে কালে হত কয়েকটি সরস্বতী পুজো। সেই সব পুজোর উদ্যোক্তারা ঠিক করলেন, দুর্গাপুজো করবেন।
তার জন্য একটা ক্লাব চাই। এলাকার লোকজন মিলে তা-ও তৈরি করে ফেললেন। কিন্তু তার নাম কী হবে? নানা প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব, টানাপড়েনের পরেও নাম ঠিক করতে না পেরে শেষমেশ নাম রাখা হল ‘অনামী ক্লাব’। ১৯৬৬ সালে শুরু হল পুজো। প্রথম বার স্থানীয় বাসিন্দা নলিনীনাথ জোয়ারদার ৫০০ টাকা চাঁদা দেন। ষাটের দশকে অঙ্কটা কম নয়। উদ্যোক্তারাও জোগাড় করেন কিছুটা। মণ্ডপ তৈরির জন্য নিজের বাঁশবাগান থেকে বাঁশ কেটে নিয়ে যেতে দেন সুরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। উদ্যোক্তারা নিজেরাই তৈরি করেন মণ্ডপ। ক্রমে পুজোর কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন নিত্যনতুন থিম আর পরিকল্পনায় প্রতি বছরই চমক আনে তারা। বাদকুল্লার অনামী ক্লাবের পুজো এখন জেলার অন্যতম পরিচিত নাম।
প্রতি বছরই নান থিমে— বিবেকানন্দ রক, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, লাল কেল্লা, আমেরিকার হোয়াইট হাউস, প্যারিসের অপেরা হাউসের আদলে গড়া হয়েছে মণ্ডপ। কাচ দিয়ে গড়া হয়েছে শিসমহলও। এ বার বাঁশ, কাঠ, প্লাই, ফাইবার দিয়ে তৈরি হচ্ছে আমেরিকার ইস্কন মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। ইউরোপীয় এবং ভারতীয় ঘরানার মিশেলে প্রতিমা গড়েছেন কৃষ্ণনগরের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সুবীর পাল। সঙ্গে থাকছে চন্দননগরের আলো। ক্ষণে ক্ষণে বদলাবে মণ্ডপের রঙ।
আগের দু’বছর অতিমারির আবহে বন্ধ থাকা মেলা এ বার ফের বসছে মণ্ডপ ঘিরে। পঞ্চমীর দিন পুজোর উদ্বোধনের সময়ে রাজ্য যুবকল্যাণ দফতরের সহযোগিতায় হবে লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান। প্রত্যেক বছরেই মানুষের ঢল নামে মণ্ডপে। সে কথা মাথায় রেখে তৈরি থাকছেন উদ্যোক্তারা। ক্লাবের সম্পাদক হিমাদ্রী পাল বলেন, “পুলিশ ছাড়াও আমাদের শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন ভিড় নিয়ন্ত্রনের জন্য। দর্শকদের মণ্ডপে ঢোকা ও বেরনো সমান ভাবে সচল রাখা হবে।”