রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
মাজায় খুব ব্যথা, দু'দণ্ড সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারি না। পতাকা বাঁধা লাঠিটা ধরে বারোটা থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছি এখানে। সবাই বলছে ইন্দিরা গান্ধীর নাতি আসবে, খুব ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে ফরাক্কায় গিয়ে একবার ইন্দিরা গান্ধীকে দেখেছিলাম। সে কথা এখনও মনে পড়ে। সেই ভিড় বাবার কাঁধে চেপে এক ঝলক ইন্দিরা গান্ধীকে দেখা। জিলিপি কিনে ঘরে ফেরা। সবটাই এখনও চোখ বন্ধ করলে দেখতে পাই। তারপর আর গান্ধী পরিবারের কাউকে দেখা হয়নি। ভাবলাম বাড়ির কাছে যখন এসেছে, এক ঝলক দেখে যায়। সেই জন্যই এত কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকা। দুপুরবেলায় আসার কথা ছিল, কিন্তু রাহুল গান্ধী এলেন বিকেল বেলা। মাজার ব্যাথাটা চরমে পৌঁছেছে। দু'একবার বসেছি আবার উঠে পড়েছি কখন রাহুল গান্ধী আসবে ভেবে।
জানি বাড়ি ফিরে এই দাঁড়িয়ে থাকার ফল ভুগতে হবে আমাকে। কিন্তু কী করি বলুন তো? সেই ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকেই কংগ্রেসকে ভালবাসি আমরা। গান্ধী পরিবারের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারি না। দেশের নেতা বলতে তাদেরকেই মানি আমরা। আর সেই নেতা যখন ঘরের দুয়ারে এসেছে, তাকে এক ঝলক না দেখলে হয় কখনও?
সেই সকাল বেলায় বাড়ি থেকে দু’মুঠো খেয়ে বেরিয়েছি, এখনও পর্যন্ত কিছু খাওয়া হয়নি। কিন্তু এখান থেকে নড়তেও পারছি না, কারণ একবার পিছনে গেলে আর সামনে জায়গাটা পাওয়া যাবে না।
এক কাপ চা কিনে খাব সেটারও উপায় নেই। ঘোলাটে চোখে এখন সব কিছুই ঝাপসা দেখি। কিন্তু তারপরেও মরে যাওয়ার আগে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখে যেতে চাই। সেই জন্যই অপেক্ষা করছি।