শহরের বয়স দেড়শো বছর পেরিয়ে গেলেও গর্ব করে বলার মতো ভাল পার্ক ছিল না। শেষমেশ সে কাজে উদ্যোগী হয় রানাঘাট পুরসভা। চূর্ণী নদীর তীরে মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়েছে ‘বিনোদিনী পার্ক’।
আজ, মঙ্গলবার থেকে এই পার্ক সকলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এ দিনই জেলাশাসক সুমিত গুপ্তের পার্ক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য টয় ট্রেন ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন উপকরণ। রয়েছে ফুড পার্ক। এছাড়া, অনুষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট জায়গাও রাখা হয়েছে। শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বড়বাজার এলাকায় গেলেই চোখে পড়বে নজরকাড়া এই পার্ক। বিঘা চারেক জমিতে এই পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে।
পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পার্ক শীতের সময়ে দুপুর বারোটা থেকে রাত সাতটা পর্যন্ত এবং গরমের সময়ে দুপুর ২টো থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। পার্ক সকালে খোলা থাকবে না।’’
জেলায় এমন বড় মাপের বিনোদন পার্ক এই প্রথম। আশপাশের জেলা তথা গোটা নদিয়ার মানুষই এখানে এসে আনন্দ করতে পারবেন। তাই পার্কটি নিয়ে সাধারণের মধ্যে উৎসাহ দানা বেঁধেছে। যদিও তার মধ্যেও কারও কারও মনে ক্ষোভ, পার্কে প্রাতর্ভ্রমণের ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে। ঘিঞ্জি এই শহরের বুকে সবুজের মাঝে হেঁটে-চলে বেড়ানোর তেমন কোনও জায়গা নেই। ফলে, খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এত টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওই পার্কে এমন কোনও জায়গা নির্দিষ্ট করা হল না কেন?
এর উত্তরে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এখানে প্রাতর্ভ্রমণের কোনও ব্যবস্থা থাকছে না। এখানকার কোনও পার্কেই এই ব্যবস্থা নেই।’’ একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বরাদ্দ অর্থের এক তৃতীয়াংশ এখনও আসা বাকি রয়েছে। যা দিয়ে আগামী দিনে পার্কটিকে আরও নতুন সরঞ্জামে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘বাকি অর্থ পেলেই এই কাজ শুরু করা হবে। আশা করছি, আগামী দুই বছরের মধ্যেই পার্কের সম্পূর্ণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।’’
শহরের বুকে এই ধরনের বিনোদন পার্ক হওয়ায় খুশি শহরবাসী। পুরোহিতপাড়ার বাসিন্দা দীপক ঘোষ, বিশ্বনাথ দাস বলেন, “আমরা আগে শুনতাম, বিভিন্ন শহরে ভাল পার্ক রয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন ওই সব পার্কে বেড়াতে যান। সেই সময়ে মনে হত, আমাদের শহরেও যদি এ ধরনের পার্ক থাকত, কত না ভাল হত!”
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে দেড়শো বছর পার করেছে রানাঘাট পুরসভা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয়েছে পুরসভার সার্ধশতবর্ষ উৎসব। সেই সময়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ কোটি টাকার বিশেষ অনুদান ঘোষণা করেছিলেন। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে এক কোটি ১৩ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। সেই অর্থেই এই পার্ক তৈরি হয়েছে। এখানে শিশুদের জন্য পাঁচটি রাইড রয়েছে। বড়দের বিনোদনের জন্যও রয়েছে নানা ব্যবস্থা।
আজই খুলছে খুশির আগল!