ইদের মুখে। বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
ইদের আগের দিন শুক্রবার মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন বাজারে সব জিনিসপত্রেরই চড়া দাম ছিল। কিন্তু একেবারে নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল, তা নয়। তবু বাজার জমেনি। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, মানুষের হাতে টাকা নেই। করোনা বিধির কারণে ভিড়ও কম হচ্ছে। তাতেই মানুষ কম জিনিসপত্র কিনছেন।
এ দিন হরিহরপাড়া, নওদা এলাকায় বাটা, পোনা মাছ ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি। মাঝারি সাইজের রুই কাতলা ছিল ২৫০-৩০০ টাকা কেজি। খাসির মাংস ছিল ৬৫০ টাকা কেজি। সাধারণ মানের লাচ্চা সেমুই বিকোচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা প্রতি কেজি, ব্র্যান্ডেড কোম্পানির লাচ্চা সেমুই বিকোচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা প্রতি কেজি। যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
হরিহরপাড়ার এক প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন বিক্রেতা সুখেন রানু বলেন, ‘‘প্রতি ইদে প্রায় পাঁচ কুইন্ট্যাল দুধের দই বসাতে হয়। মিষ্টিও তৈরি হয় আড়াই-তিন কুইন্ট্যাল ছানার। ইদের আগের দিনই সব বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর দই মিষ্টির চাহিদা একেবারেই নেই। দেড় কুইন্ট্যাল দুধের দই আর এক কুইন্ট্যাল ছানার মিষ্টি বিক্রি করতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।’’ এ বছর ইদের আগের দিন বিকেলেও অর্ধেকের বেশি দই, মিষ্টি অবিক্রিত রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের কারনে অধিকাংশ কারখানা বন্ধ থাকায় এবং কাঁচামালের জোগান কম থাকায় দৌলতাবাদ, বেলডাঙা, রেজিনগরের মতো লাচ্চা কারখানায় লাচ্চা, সেমুই উৎপাদন হয়েছে অনেক কম। ফলে লাচ্চা, সেমুইয়ের দাম স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় দেড় গুন বেশি। সেই অর্থে দই, মিষ্টির দাম রয়েছে নাগালের মধ্যে। করোনা আবহে দুধের চাহিদা কম থাকায় বাড়েনি দই, মিষ্টির দাম। হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকল, দৌলতাবাদের মত মফস্বলের বাজারে দই বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০-১০০ টাকা। সাধারণ সাইজের রসগোল্লা, ছানা বড়া বিক্রি হচ্ছে ৫-৬ টাকা প্রতি পিস। তবুও ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম।
তবে এই দিন সকাল থেকে কান্দি মহকুমার কান্দি থেকে বড়ঞা, খড়গ্রাম থেকে সালার সর্বত্রই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গিয়েছে। কান্দি মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক তারকেশ্বর প্রামাণিক বলেন, “ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক ছাড়া বেচাকেনা করা যাবে না, সেটা আমরা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছি। সেটা নিয়ে প্রচারও হয়েছে। কিন্তু তারপরেও উৎসবের আগে যে ভাবে ক্রেতা ও বিক্রেতারা মাস্ক ছাড়াই বাজারে আছেন সেটা সত্যিই আতঙ্কের ঘটনা।’’