নিজস্ব চিত্র
কন্টেনমেন্ট জোনে করোনা পরীক্ষার তালিকায় তাঁর নাম তুলেছিলেন স্থানীয় আশা কর্মী। এতেই মেজাজ সপ্তমে উঠেছিল কালীগঞ্জের বড়চাঁদঘর পঞ্চায়েত এলাকায় সাবমারার দিনাজপুর পাড়ার প্রাথমিক শিক্ষক সনাতন বল্লভের। অভিযোগ, ওই আশাকর্মীকে ‘শিক্ষা দিতে’ খুড়তুতো ভাই মানিক বল্লভকে সঙ্গে নিয়ে চড়াও হন সনাতন। বুধবার আশাকর্মী মিনতি মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে দুই ভাই তাঁকে মারধর করেন, অকথ্য ভাষায় গালি দেন এবং ঘর ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ।
এরপর মিনতিদেবী পলাশি ফাঁড়িতে দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে সনাতন বল্লভকে গ্রেফতার করেছে। কালীগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তিমির কান্তি ভদ্র বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। এক জন শিক্ষকের যদি এই আচরণ হয় তা হলে আশপাশের মানুষের কাছে কোন উদাহরণ তৈরি হবে? আশাকর্মীরা মাঠে নেমে করোনা পরিস্থিতিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তাঁদের উপর এমন হামলার উপযুক্ত ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাইছি।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই এলাকায় গত কয়েক দিনে তিন জনের করোনা ধরা পড়ে। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ওই কন্টেনমেন্ট জোনের বাসিন্দাদের করোনা পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষা করাতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় গ্রামের আশাকর্মী মিনতি মুখোপাধ্যায়কে।
মিনতিদেবী বলেন, ‘‘গত সোমবার এলাকায় গিয়ে তালিকা তৈরির কথা জানিয়েছিলাম। সেই সময় সনাতন বল্লভের বৃদ্ধ বাবা তাঁর নিজের ছেলে ও ভাইয়ের ছেলের নাম তালিকায় দিতে বলেছিলেন। সেই মতো তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। বুধবার গ্রামে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। তার আগে বাড়িতে রান্না করছি, এমন সময় করে সনাতন ও মানিক এসে হামলা করে। মারধর ও ভাঙচুর করতে থাকে। গ্রামের লোক এলে আমাকে বাঁচায়।’’ তাঁকে পলাশির স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্ক অনেকটা দূর হলেও এখনও অনেকের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা আছে। সামাজিক ভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে তাঁরা করোনা পরীক্ষা করাতে চাইছেন না। রোগ লুকোতে চাইছেন। এটাই সমস্যা তৈরি করছে।