Nursing staffs

নার্সদের বিক্ষোভে রাতভর ঘেরাও সুপার

যে ২৮ জন নার্সিংকর্মী বিক্ষোভ অবস্থানে বসেছেন তাঁরা সকলেই বদলির আদেশ পেয়েছেন গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু বার বার বলেও জঙ্গিপুর হাসপাতাল থেকে রিলিজ পাচ্ছেন না তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪১
Share:

ফাইল চিত্র.

নার্সদের হাতে রাতভর হাসপাতালের মধ্যেই ঘেরাও হয়ে হাসপাতালের সুপার। এক বছর আগে ২৮ জন নার্সিং কর্মী বদলি হয়েও হাসপাতাল থেকে রিলিজ পাননি। তাতেই অবস্থান বিক্ষোভ চলল জঙ্গিপুর মহকুমা ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। তবে হাসপাতাল স্বাভাবিক ভাবেই চলছে।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যে থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের তিন তলার কনফারেন্স রুমে শুরু হয় নার্সদের এই অবস্থান বিক্ষোভ। তার মধ্যেই সুপারকে পেয়ে ঘেরাও করে রাখেন তারা। রাতভর ঘেরাও করে রেখে বৃহস্পতিবার সকালে সুপারকে ছেড়ে দেওয়া হলেও নার্সরা তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিক্ষোভরত নার্সরা জানান, হাসপাতালে যাঁর যে ওয়ার্ডে যখন ডিউটি রয়েছে, তখন তিনি সে ওয়ার্ডে ডিউটি করে অবশিষ্ট সময় ধর্নায়

Advertisement

যোগ দিচ্ছেন।

যে ২৮ জন নার্সিংকর্মী বিক্ষোভ অবস্থানে বসেছেন তাঁরা সকলেই বদলির আদেশ পেয়েছেন গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু বার বার বলেও জঙ্গিপুর হাসপাতাল থেকে রিলিজ পাচ্ছেন না তাঁরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন নার্সরা রিলিজের জন্য। কিন্তু ফল হয়নি তাতেও। তাই মরিয়া হয়ে বুধবার সন্ধ্যে থেকে হাসপাতালের ভবনে কনফারেন্স রুমের মধ্যেই ধর্না বিক্ষোভে বসে পড়েন তারা ।

নার্সদের দাবি, জঙ্গিপুর হাসপাতালে কাজের প্রচণ্ড চাপ। এই চাপের মুখেও মানবিক কারণে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের প্রতিদিন কোনও না কোনও অজুহাতে মানসিক নির্যাতনের মুখে পড়তে হচ্ছে। অনেকেরই বাড়ি মেদিনীপুর। তবু তাঁরা প্রাপ্য ছুটি পাচ্ছেন না। প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের শাস্তির ভয় দেখানো হচ্ছে। এই দুঃসহ অবস্থা থেকে বাঁচতে জঙ্গিপুর হাসপাতাল থেকে এখনই রিলিজ চান তাঁরা।

সুপার সায়ন দাস বলেন, ‘‘বছর খানেক আগে বদলির আদেশ এলেও তাদের বিকল্প কাউকে দেওয়া হয়নি। এমনিতেই হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় ৭২ জন নার্সিং কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। ফলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে চরম নার্সিং সঙ্কট চলছে। তার উপর ২৮ জন বদলি হওয়া নার্সকে রিলিজ দিলে ১০৪ জন কম নার্সিং কর্মী নিয়ে হাসপাতালে কাজ চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। নার্সিং ইনচার্জ ২৪ জনের জায়গায় রয়েছেন মাত্র ৯ জন। এমনিতে প্রতিদিন হাসপাতালে প্রসবের সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ জন। বারবার কর্মী চেয়ে জানিয়েছি স্বাস্থ্য ভবনকে। কিন্তু কিছু হয়নি। তাই রাতভর ওদের হাতে ঘেরাও হয়ে থাকতে হয়েছে।"

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা কী করে রিলিজ করব তাঁদের? জঙ্গিপুর হাসপাতালে এমনিতেই ৩০ শতাংশ নার্সিং কর্মীর ঘাটতি আছে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তাঁদের বদলির আদেশ হয়। স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হয় এ বছর এপ্রিল মাসে নতুন নার্সিং কর্মী কাজে যোগ দিলে, তখন সকলকে রিলিজ দেওয়া হবে। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতির জন্য নিয়োগ হয়নি। এখন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তা যেকোনও সময়ে স্বাস্থ্য ভবনে চলে আসবে।স্টাফ পেলেই ছেড়ে দেব। কিন্তু এর জন্য সুপারকে রাতভর ঘেরাও করে রাখার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement