সাগরদিঘিতে দৌড় শুরুর আগে রীতা বসু ও রীনা সাহা। নিজস্ব চিত্র।
এক জনের বয়স ৫৭ পেরিয়েছে, অন্য জন ৫৮। এক জন নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা রীতা বসু, অন্য জন কলকাতার রীণা সাহা। প্রায় ২০০ কিলোমিটার পেরিয়ে সাগরদিঘি এসএন হাইস্কুলের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবে ৭ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে ৫১ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছে নজর কাড়লেন তাঁরা। নবগ্রামের সুকি থেকে সাগরদিঘি বাসস্ট্যান্ড, দৌড়ের এই চমক দিয়েই শুরু হয়েছে স্কুলের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবের।
কিশোর, ছাত্র, স্থানীয় গ্রামবাসী সকলেই ছিলেন এই দৌড়ে। তবে নজর কাড়লেন রীতা ও রীণা। দৌড়নো তাঁদের শখ। আর সেই শখ মেটাতেই রাজ্যের যেখানেই দৌড় প্রতিযোগিতার খবর পান ছুটে যান তাঁরা। প্রথম, দ্বিতীয় কে হল, না হল তাতে কিছুই যায় আসে না তাঁদের। তাঁরা চান অন্য বয়স্করাও এগিয়ে আসুন। ছোট থেকে অভ্যেস করুন দৌড়নোর। রোগ-ব্যাধি দূরে পালাবে তাই নয়, শরীর থাকবে চনমনে, সতেজ। দু’জনেরই না আছে বড় কোনও রোগ। দাবি করলেন, ওষুধ ছুঁতে হয় না তাঁদের এই বয়সেও।
রীণা বলছেন, ‘‘বয়স একটা সংখ্যা মাত্র। সব বয়সেই সবাই দৌড়তে পারেন, যদি তিনি অভ্যাস করেন। আমি রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াই। আর নিয়মিত দৌড় অভ্যাস করি। কলকাতায় যত ম্যারাথন দৌড় হয় আমি তাতে যোগ দিয়ে থাকি। রাজ্যের কোথাও ম্যারাথন হচ্ছে জানতে পারলেই চেষ্টা করি তাতে যোগ দিতে। সে ভাবেই এসেছি সাগরদিঘিতে। এখানে এসে অনেক প্যাথোলজিক্যাল ল্যাব দেখলাম। সেখানে বহু মানুষের ভিড়। খুব খারাপ লাগল দেখে।”
রীতার স্কুলে পড়ার সময় থেকেই প্রিয় খেলা ছিল দৌড়। বিয়ের পরে সমস্যা হয়। রীতা বলেন, ‘‘বাড়ির বৌ মাঠে ঘাটে দৌড়বে এটা ঠিক পছন্দ করতেন না স্বামী। তাই বন্ধই করে দিতে হয়েছিল দৌড়। বছর ১৫ আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। বছর দশেক থেকে ফের দৌড় শুরু হয়েছে। ১০ কিলোমিটার দৌড়, ২৫ কিলোমিটার সাইক্লিংয়ে সক্ষম আমি। নিয়মিত হাঁটি ৩ কিলোমিটার।’’