জলমগ্ন এলাকা ঘুরে দেখলেন অধীর চৌধুরী। ছবি:কৌশিক সাহা।
বড়ঞা, কান্দি ও সংলগ্ন এলাকায় বন্যার জন্য রাজ্য সরকারকই দায়ী বলে দাবি করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের বিধায়ক অধীর চৌধুরী। মঙ্গলবার সকালে নৌকায় চেপে বড়ঞা, ভরতপুর-১, কান্দি ব্লকের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। জলবন্দি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। তখনই রাজ্য সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
তিনি জানান, ওই এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০১২ সালে কেন্দ্র সরকার কান্দি মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন করে। সেই কাজের জন্য ৪৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়। কিন্তু সাড়ে তিন বছর রাজ্য সরকার তা ফেলে রেখেছিল। মাস খানেক আগে সেই কাজ শুরু হয়েছে। যে সময় অনুমোদন মেলে সেই আমলে কাজ শুরু হলে বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেত বলে দাবি করেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘‘মাস্টার প্ল্যানের কাজ সময় মতো শুরু করলে এমন দুর্ভোগে পড়তে হত না বাসিন্দাদের। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি। বহু আন্দোলন করেছি। ইদানীং ওই কাজ শুরু হয়েছে।”
মাস খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে মুর্শিদাবাদে এসে ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তারপর থেকে ময়ূরাক্ষী নদীর উপর বাঁধ মেরামতির কাজে হাত লাগায় সেচ দফতর। তবে বর্ষার জন্য ওই কাজ বন্ধ আছে।
তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকার মুখে বড় বড় কথা বলছে। কিন্তু বাস্তবটা সম্পূর্ণ উল্টো। মানুষ কমবেশি দু’সপ্তাহ ধরে জলবন্দি হয়ে রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়নি। যাতায়াতের জন্য একটি নৌকারও ব্যবস্থা করা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে অধীরবাবু বলেন, “নবান্নে বসে শুধু বিরিয়ানি খাচ্ছেন আর মুখে বলছেন আমি গরিব, আমার সরকার গরিব। যা আছে তাই দিচ্ছি। ও সব ভনিতা করে কোনও লাভ নেই।”
অধীরবাবুর দাবি, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য ১৩ অর্থ কমিশন ৬১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তার মধ্যে কেন্দ্র দেবে ৭৫ শতাংশ। বাকিটা দেবে রাজ্য। টাকা নেই এমন কথা ঠিক নয়। এখন উত্তরবঙ্গে বন্যা নেই। দক্ষিণবঙ্গে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাতেই মানুষের পাশে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার বলে অভিযোগ তাঁর। অধীরবাবু বলেন, “ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকেও বন্যায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঠিক মতো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।” এ দিন বড়ঞার বিধায়ক প্রতিমা রজক ও কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে নিয়ে কুলি ও সুন্দরপুর এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। নৌকায় বসে ভরতপুর-১ ব্লক ও কান্দির হিজল এলাকাও ঘুরে দেখেন। তবে কোন জায়গাতেই নীচে নেমে কথা বলার মতো পরিস্থিতি না থাকায় নৌকা থেকেই বাসিন্দাদের খোঁজ নেন।