ফাইল চিত্র।
মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর হামলার ঘটনায় ফের সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাজ্য পুলিশের উপর সরাসরি অনাস্থা প্রকাশ করে অধীরের অভিযোগ, রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্ত চাইছে না কারণ তাতে ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বুধবার মহামিছিল ও সভা করতে অধীর চৌধুরী অরঙ্গাবাদে আসেন। সেখানেই নিমতিতায় মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর হামলা নিয়ে সরাসরি রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে অধীর বলেন, “ যে পুলিশ খুঁজে পেতে একটা পকেটমার ধরার যোগ্যতা রাখে না তারা ধরবে জাকিরের উপর হামলাকারীদের ? মুখ্যমন্ত্রীর জানা উচিত ছাগল দিয়ে ধান মাড়ানো যায় না। তাই ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও বিস্ফোরণ কাণ্ডে কাউকে ধরতে পারেনি তার পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন দূর থেকে রিমোটের সাহায্যে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এ সব কাজ সন্ত্রাসবাদীদের। তবু তার তদন্তের ভার পুলিশকে কেন?”
অধীর বলেন, “জাকিরের সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক। ভাইয়ের মত। আমি তাকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে চিকিৎসকরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেননি। জাকির নিজে খুব সৎ ছেলে। নিজে মেহনত করে বড় হয়েছে। তবু তার অহংবোধ নেই। জাকিরকে যদি তাদের দলনেত্রী বিন্দুমাত্র ভালবেসে থাকেন তবে এই হামলায় জড়িতদের ধরতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতেন। কিন্তু তা দেননি। এতেই বোঝা যায় ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। তাতে জাকির যায় যাক, দলটাকে তো ঠিক রাখতে হবে।”
অধীরের দাবি, বিস্ফোরণ কাণ্ডে সাত দিনেও কাউকে ধরা যায়নি। যে সরকার তাদের মন্ত্রীকে নিরাপত্তা দিতে পারে না তারা রাজ্যের মানুষকে কি নিরাপত্তা দেবেন? সব পুলিশকে যদি ভাইপোকে পাহারার কাজে লাগানো হয় তবে মানুষ নিরাপত্তা পাবে কোথায়। গোটা দলটাই এখন চোরের দল হয়ে গেছে।”
অধীরের আরও অভিযোগ, রাজ্যে লোকসভায় বিজেপি ১৮টি আসন পাওয়ায় ঘুম ছুটে গেছে মমতার। এখন চাইছেন বিজেপিকে রুখতে। ২০১১ সালে কংগ্রেসের হাত ধরেই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। এসেই তিনি কংগ্রেস ও সিপিএমকে উতখাত করতে উঠে পড়ে লাগেন। আর এসএসের সভায় গিয়ে মমতা নিজে আরএসএসকে দেশপ্রেমিক বলে প্রশংসা করে এসেছেন। তৃণমূল অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে।
এদিকে নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে এখনও অন্ধকারেই পুলিশ। গত এক সপ্তাহ ধরে সুতি থানা এলাকার একাধিক গ্রাম থেকে যারা বোমা নিয়ে কারবার করে তাদের অনেককেই সন্দেহজনক ভাবে ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। কিন্তু সেভাবে কোনও যোগসূত্র না পাওয়ায় পরে ছেড়ে দেয় তাদের। মঙ্গলবার রাতেও স্থানীয় মহলদার পাড়া থেকে পুলিশ একজনকে আটক করে। বিস্ফোরক ব্যবহারে এলাকায় সিদ্ধহস্ত সে। তাকে আটক করে লক আপে না রেখে রাখা হয় অন্য একটি থানায়। সেখানেই তাকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে দুপুরে পুলিশ সুপারের অফিসেও নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। তবে নেহাতই সন্দেহক্রমেই ধরা হয়েছে তাকে।