জলঙ্গির ভারত -বাংলাদেশ সীমান্তে নজর দারি বিএসএফের। ছবি সাফিউল্লা ইসলাম।
আশঙ্কা থাকলেও মঙ্গলবার দিনভর একেবারে স্বাভাবিক ছিল ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারহীন এলাকা। নিত্য দিনের মতোই এ দিনও সীমান্তের চর এলাকায় চাষবাস থেকে পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। বিএসএফের নজরদারিতেও তেমন কোনও হেরফের লক্ষ্য করা যায়নি। নিয়মমাফিক নাম নথিভুক্ত করেই চাষি ও মৎস্যজীবীরা গিয়েছেন পদ্মায় বা পদ্মা পাড়ের চরের খেতে। এ দিন বিকেলেও চর এলাকার মাঠ থেকে ফেরার পথে চাষিরা বললেন, ‘‘যা দেখছি মোবাইলেই দেখছি।’’ বাংলাদেশের ঘটনার কোনও আঁচ সীমান্তে ছিল না। তবে সীমান্তের বাসিন্দাদের দাবি, সময় যত গড়াবে অস্থিরতা শহর থেকে একেবারে গ্রাম-গঞ্জেও নেমে আসবে। তখন একটা সমস্যা তৈরি হবে। বিশেষ করে কিছু মানুষ প্রাণ বাঁচাতে চোরা-পথে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবেন বলে দাবি করছেন তাঁরা।
খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা এ দেশে চোরা-পথে চলে এসেছিলেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে। আবার সীমান্তের বাসিন্দাদের দাবি, শেখ হাসিনা ক্ষমতা দখলের পরে বিএনপি-র একটা অংশ এ দেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন বেশ কিছু দিন। এ বারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বলেই মনে করছেন জলঙ্গি রানিনগর সীমান্তের একাধিক বাসিন্দা। বামনাবাদ সীমান্তের বাসিন্দা জুলফিকার আলি বলছেন, ‘‘বাংলাদেশের আত্মীয়, বন্ধুদের কাছ থেকে শুনতে পাচ্ছি এখন গন্ডগোল ছড়িয়ে পড়ছে একেবারে গ্রামে গঞ্জে। নানা স্তরের নেতাদের বাড়িতেও লুটপাট শুরু হয়েছে বলে শুনছি মঙ্গলবার থেকে। যদি এমন ঘটনা বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে তা হলে কিছু মানুষ প্রাণ বাঁচাতে চোরা-পথে এ দেশে আসবেন। তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’’
সোমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরেই লুট হয়েছে গণভবন। তাণ্ডব চলেছে সংসদ ভবনেও। খোদ রাজধানী ঢাকার একের পর এক থানা জ্বলে গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের আগুনে। তবে এখন সেই গন্ডগোল লুটপাটের ঘটনা ধীরে ধীরে বিভিন্ন জেলা থেকে উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। আর তাতেই সীমান্তে আশঙ্কা বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
যদিও বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে সীমান্তে। অনুপ্রবেশ রুখতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে টানা বৃষ্টি হলে সেই প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও ব্যাহত হবে বলে দাবি বিএসএফ জওয়ানদের। রাজশাহী শহর থেকে সেখানকার উপজেলার বিভিন্ন শহর রানিনগর সীমান্তের একেবারে উল্টো দিকে।
মঙ্গলবার রাজশাহীতেও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে শহর জুড়ে। ফলে সীমান্তের বাসিন্দাদের দাবি, সেই আগুনের আঁচ কিছুটা হলেও পড়বে সীমান্তে। বিশেষ করে জলঙ্গির দু’টি চর এলাকার গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, প্রভাব পড়বে তাঁদের গ্রামেও।