সহায়ক মূল্যে ধান কেনার প্রশ্নে পিছিয়ে পড়া রাজ্য শেষতক নোটকাণ্ডকেই ঢাল করল।
নোটের ঘায়েই যে ধান কিনতে চাষিদের নাভিশ্বাস উঠেছে শনিবার তা খোলা গলায় জানিয়ে দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, ‘‘টাকা তো আমরা যথাসময়েই পাঠাচ্ছি। নোটকাণ্ডের জেরে চাষিরা তা তুলতে না পারলে কী করব বলুন!’’
গত বছর ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে সহায়ক মূল্যে রাজ্য জুড়ে ১২ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছিল। এ বছর সক্ষ্যমাত্রা ছিল আরও বেশি। তবে, তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি ধান গোলায় তুলতে পারেনি খাদ্য দফতর।
এ দিন, কৃষ্ণনগরে নদিয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার পর জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ধান কেনার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। ব্লক স্তরে ঘুরে আমরা ধান কেনার জন্য স্থায়ী কেন্দ্রও খুলেছি।’’ তাঁর দাবি, নোট বাতিলের জেরে গ্রামাঞ্চলের ব্যাঙ্ক থেকে চাষিরা সে টাকা তুলতে পারছেন না। ফলে, কম টাকা দিলেও নগদের হাতছানিতে চাষিরা ফিরে যাচ্ছেন ফড়েদের কাছে।
শনিবার সকালে কৃষ্ণনগরে জেলাপরিষদের হলে জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠক করেন খাদ্যমন্ত্রী। ছিলেন সাসক দলের জেলার অন্য জনপ্রতিনিধিরাও। সেখানে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় বাসিন্দাদের খাদ্য দেওয়া জন্য আমরা কেন্দ্রের কাছ থেকে দু’হাজার কোটি টাকা পাই। গত ছ’মাসে দিল্লিকে বাইশ বার চিঠি পাঠিয়েছি। সাড়া দেয়নি জানেন।’’
তবে, মন্ত্রী চাষিদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোর দাবি করলেও চাষিদের অধিকাংশেরই যে নিজের অ্যাকাউন্ট নেই ঠারেঠোরে তা মেনে নিয়েছেন তিনি। তাঁদের অধিকাংশেরই রয়েছে অ্যাকাউন্ট রয়েছে শুধু সমবায় সমিতির অ্যাকাউন্ট। যে অ্যাকাউনন্টে টাকা পাঠালেও চাষিদের তা হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ধান কেনার জন্য রাজ্যের ১০ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন মন্ত্রী। তিনটি মৌজা পিছু একটি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাজ করবে। তাঁরা চাষিদের বুঝিয়ে একটি জায়গায় ধান জড়ো করার ব্যবস্থা করবে। এ জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি এক কুইন্ট্যাল ধান পিছু ৩১.২৫টাকা পাবে। মন্ত্রীর দাবি, নদিয়ায় আটটি এবং বর্ধমানে ২৬টি মহিলা পরিচালিত সমবায় সমিতি এ বারে প্রথম সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজ শুরু করেছে। তা ছাড়াও প্রতিটি ব্লকে চারটি করে সরাসরি ধান কেনার শিবির করা হবে বলে জানান তিনি।