অধ্যক্ষের ঘরে জখম ছাত্র। বুধবার বেতাই কলেজে। ছবি: সাগর হালদার
মাজদিয়া, হাঁসখালির পর এবার তেহট্ট সরকারি মহাবিদ্যালয়েও টিএমসিপি এবং এবিভিপি-র গন্ডগোলের জেরে উত্তেজনা ছড়াল। মঙ্গলবার দুপুরে এবিভিপি-র সদস্যরা মেরে এক টিএমসিপি সদস্যের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। এর জেরে বুধবার সকাল থেকেই বিশাল সংখ্যায় পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল কলেজে। এবিভিপি কলেজে ‘দাদাগিরি’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষও।
প্রায় বছর দুয়েক বন্ধ থাকার পর ফের হতে চলেছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। সে কথা মাথায় রেখেই জেলার বিভিন্ন কলেজে এবিভিপি প্রভাব বিস্তারের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তেহট্ট সরকারি মহাবিদ্যালয় সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন আগে এবিভিপি-র ছেলেমেয়েরা কলেজের মধ্যে মিছিল করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছিলেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন পড়ুয়াদেরই একাংশ। প্রশ্ন উঠেছিল, কলেজে ছাত্র সংসদ না থাকা সত্ত্বেও কেন ব্যানার-পতাকা?
টিএমসিপি-র অভিযোগ, মঙ্গলবার জোর করে কলেজে ঢুকে গোলমাল বাধান এবিভিপি-র সদস্যরা। জোর করে কলেজে ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, রাজেশ মণ্ডল নামে টিএমসিপি-র এক সদস্যের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। মারধর করা হয় আশরফ মল্লিক নামে আর এক ছাত্রকে। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে। ওই ঘটনার জেরেই বুধবার দুপুরে কলেজের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে টিএমসিপি। আহত দুই ছাত্র রাজেশ ও আশরফ-সহ অন্য ছাত্ররা কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
রাজেশ বলেন, ‘‘আমরা টিএমসিপি করি বলে এবিভিপি-র ছেলেদের রাগ। ওরা বারবার আমাদের কাছে এসে বলে, ‘‘তোদের এবিভিপি করতে হবে। আমরা কখনওই সে দিকে পা বাড়াইনি। মঙ্গলবার দুপুরে এক বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা আমাকে হুমকি দিতে থাকে। তারপর বাইরে এসে মারধর করে। কেউ পিছন থেকে এসে লোহার রড দিয়ে আমার মাথায় মারে। আমার মাথা ফেটে যায়।’’ তেহট্ট ব্লক তৃণমূল সভাপতি জয়দেব সমাদ্দার বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এই কাজ এবিভিপি-র পক্ষেই সম্ভব। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’’
অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে এবিভিপি-র জেলার সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র দেবনাথ বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ভাবে সাজিয়েছে টিএমসিপি। ওই দিন ওরা কয়েকজন খারাপ কাজ করছিল। আমাদের ছেলেরা ওদের নীচে যেতে বলে। এরপর ধাক্কাধাক্কির সময় ওদের একটি ছেলে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পায়।’’
কলেজের অধ্যক্ষ শিবশঙ্কর পালও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন এবিভিপি-র দিকে। তিনি বলেন, ‘‘এবিভিপি-র সমর্থকরা কলেজের ভিতরে যে সমস্ত কাজকর্ম করছে তা সংবিধান বিরোধী। তারা নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ব্যানার টাঙানো হচ্ছে। এদের জন্যই কলেজের কাজকর্ম ঠিক ভাবে চালানো যাচ্ছে না। দাদাগিরি করছে, শিক্ষকদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করছে।’’