আত্মঘাতী তরুণী। প্রতীকী চিত্র।
বাঁ চোখের উপরে ছিল শ্বেতির দাগ। অভিযোগ, সেই জন্য প্রেমিকের পরিবার মাঝে মধ্যেই তরুণীকে কটূক্তি করত। শেষ পর্যন্ত ওই অপমান সহ্য করতে না পেরে, হোয়াটসঅ্যাপে স্টেটাসে নিজের অভিমানের কথা লিখে আত্মঘাতী হলেন ধানতলার বাসিন্দা প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী। তাঁর নাম বুল্টি কীর্তনীয়া (১৯)। মৃত তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর প্রেমিক জিৎ সরকার ও যুবকের বাবা বিশ্বজিৎ সরকারকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ধানতলা থানার পূর্বপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন বুল্টি কীর্তনীয়া। তিনি বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরদেড়েক আগে ধানতলার শংকরপুরের বাসিন্দা জিৎ সরকারের সঙ্গে বুল্টির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই পরিবার তাঁদের সম্পর্কের কথা জানত বলে জানা গিয়েছে।
অভিযোগ, দিনকয়েক আগে তরুণীর প্রেমিক দুর্ঘটনার কারণে বাড়িতে জখম অবস্থায় রয়েছেন জানিয়ে বুল্টিকে নিজের বাড়িতে ডাকেন। বুল্টি যুবকের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁর বাড়িতে যান। সেখানে অভিযুক্ত যুবকের বাবা-মা ও আত্মীয়েরা তরুণীর গায়ে শ্বেতির দাগের জন্য তাঁকে চরম অপমান করেন বলে অভিযোগ। সেই কথা বাড়ি ফিরে তরুণী তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন।
মৃতার বাবা পলাশ কীর্তনীয়া বলেন, ‘‘ওই ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যেরা আমার মেয়েকে প্রতি মুহূর্তে অপমান করত। মানসিক নির্যাতন করত। মেয়ের শ্বেতি থাকা নিয়ে কটূক্তি করতেও ছাড়েনি। মেয়ে আত্মঘাতী হতে বাধ্য হয়েছে। আমরা ওদের শাস্তি চাই।’’
জানা গিয়েছে, গত সোমবার বিকেলে নিজের ঘরে একাই ছিলেন ওই তরুণী। বিকেল প্রায় সাড়ে চারটে নাগাদ তাঁকে ডাকাডাকি করলেও উত্তর মেলেনি। পরে পরিবারের সদস্যেরা দরজা ভাঙতেই তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।