—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পায়ে সমস্যা থাকার কারণে টোটোতে বার বার ব্রেক দিতে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই দিনের ভিড় এড়িয়ে ফাঁকা রাস্তায় টোটো চালাতে রাতকে বেছে নিয়েছিলেন বহরমপুরের আম্বেদকরপল্লির শেখ কেয়াসিস (৪৭)। আর সেটাই তাঁর কাল হল। স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে যাত্রী সেজে কেয়াসিসকে খুন করে তাঁর টোটো ছিনিয়ে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। বহরমপুর শহরের মোল্লাগেড়ের ধারের ঘটনা। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের পরিবার পরিজনদের দাবি, কেয়াসিস শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী ছিলেন। তাঁর পায়ের সমস্যা ছিল। সে কারণে টোটো চালানোর সময় ব্রেক করতে গিয়ে সমস্যা হত। তাই দিনের ভিড় এড়িয়ে রাতে ফাঁকা রাস্তায় টোটো চালাতেন। এর আগেও কেয়াসিসের একটি টোটো ছিনতাই করেছিল দুষ্কৃতীরা। ফের মঙ্গলবার রাতে তাঁর টোটো ছিনতাই করতে দুষ্কৃতীরা যাত্রী সেজে টোটোয় চেপে বসেন। তার পরে মোল্লাগেড়ের ধারে ফাঁকা রাস্তায় তাঁর গলায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে টোটো নিয়ে পালিয়ে যায়।
কেয়াসিসের স্ত্রী আদোরা বিবি বলেন, ‘‘আমার স্বামী প্রতিবন্ধী। তিনি রাতে টোটো চালাতেন। মঙ্গলবারও রাতে টোটো নিয়ে বেরিয়েছিলেন। বাসস্ট্যান্ড থেকে কয়েক জন দুষ্কৃতী যাত্রী সেজে আমার স্বামীর টোটো ভাড়া করে মোল্লাগেড়ে ধার যাওয়ার জন্য। তারপর এই ঘটনা ঘটে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘যখন আমার স্বামীর গলা কেটে দেয়, তখন ও গলা ধরে ওর বন্ধুদের ফোন করেছিলেন। তারপরে আর ফোন ধরেননি। পরে ওর বন্ধুরা মোল্লাগেড়ের ধারে এসে দেখেন আমার স্বামী পড়ে আছে।’’ মৃতের পরিবারের দাবি, টোটো ছিনতাই করার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে গাড়ি পাওয়া গিয়েছে। ছিনতাইকারীরা টোটো নিয়ে উত্তরপাড়া মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। তখন সেখানেই একটি চারচাকা গাড়ির সাথে ওই টোটোর ধাক্কা লাগে। সেখানে কেয়াসিসের বন্ধুরা সেই টোটো চিনে ফেলেন। আর তখনই ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়। কয়েক বছর আগেও কেয়াসিসের টোটো ছিনতাই হয়েছিল বলে তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন। তবে সেই টোটো উদ্ধার হয়নি।
কেয়াসিসের পড়শি নেপাল মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা মঙ্গলবার রাত্রেই এই ঘটনা জানতে পেরেছি। তিনি প্রতিদিনই রাত্রে বেরিয়ে পড়ে, ভোরে বাড়ি চলে আসতেন। দুটো ছেলে মেয়ে রয়েছে। এর আগেও তাঁকে বেঁধে রেখে মারধর করে টোটো ছিনতাই করেছিল দুষ্কৃতীরা।’’ টোটো ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক নবব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে পেরেছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।