—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
এমসে চাকরি দেওয়ার নাম করে শ’দুয়েক লোকের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম বলরাম দাস। বাড়ি রানাঘাটের আনুলিয়ায়। হাঁসখালির এক তৃণমূল নেতা তার সঙ্গে অভিযোগকারী যুবকদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ধৃতকে মঙ্গলবার রানাঘাট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক আট দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে হাঁসখালি থানার পাখিউড়া গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ বিশ্বাস পুলিশের কাছে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, তিনি ছাড়াও এলাকার আরও কয়েক জন যুবক কল্যাণী এমসে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছেন। অভিজিৎ দাস ও রাজু গুপ্ত নামে দুই যুবকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয়েছিল। তাদের ফোন নম্বরও দেওয়া হয় পুলিশকে। তাদের সন্ধানে নেমেই পুলিশ বলরাম দাসের নাম জানতে পারে। সে-ই ওই যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে অভিযোগ। তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন রামনগর বড়চুপরিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা হাঁসখালি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য যামিনী মুন্ডারি।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পেজ তৈরি করে এমসে করণিক পদে চাকরি দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, অনলাইনে আবেদন করার পর অনলাইনেই পরীক্ষা হবে। অভিজিৎ বিশ্বাসের অভিযোগ, “আমাদের এলাকার প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানই প্রথম এই চাকরির সন্ধান দেন। তিনিই আমাদের বলরামের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন।” তাঁর দাবি, “ওদের কথা মতো আমরা ৪২৫ টাকা দিয়ে ফর্ম পূরণ করি। অনলাইনে আমাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। তার পর তন্ময় দাস নামে এক জন এমসের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে আমাদের ফোনে জানান যে আমরা পাশ করেছি। এর পর ডাক্তারি পরীক্ষা থেকে শুরু করে নানা কারণ দেখিয়ে মোট সাড়ে ১২ হাজার টাকা নেওয়া হয়। ২৮ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল।”
এর মধ্যে অনলাইনেই নিয়োগপত্র পাঠানো হয়। সেই চিঠিতে ৩ ফেব্রুয়ারি কাজে যোগ দিতে বলা হয়। অনলাইনে এমসের 'গেটপাস' ও 'আইডি' পাঠানোও হয়েছিল। কিন্তু সে দিন এমসে গিয়ে তাঁরা কারও দেখা পাননি। বারবার চেষ্টা করেও ফোনে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। শেষে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝে সোমবার তাঁরা হাঁসখালি থানায় অভিযোগ করেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জেনেছে, বলরাম বস্তুত ‘মিডলম্যান’-এর কাজ করত। তার কাজ ছিল খরিদ্দার জোগাড় করা। যামিনী মুন্ডরীকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায় নি।
এ দিন যামিনী মুন্ডারি বলেন, “বলরাম দাস উৎকর্ষ বাংলায় কাজ করত। সেই সুবাদে পঞ্চায়েতে আসত। আমি তখন প্রধান। আগেও সে আমার পরিচিত চার-পাঁচ জনকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছে বলে তাকে অবিশ্বাস করিনি।”
তাঁর দাবি, “আমি যাদের পাঠিয়েছিলাম তাদের কোনও রকম টাকা দিতে বারণ করেছিলাম। ওরা নিজেরাই লোভে পড়ে টাকা দিয়েছে।” তিনি জানান, টাকা দেওয়ার কথা শুনে তিনিও ওই যুবকদের সঙ্গে এমসে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়েই বুঝে যান, প্রতারণা হয়েছে। প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত আরও দু’জনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।