জখম পঞ্চায়েত সদস্য। করিমপুরের পাট্টাবুকায়। —নিজস্ব চিত্র।
দোলের রাতে মত্ত অবস্থায়, নেশার ঘোরে প্রতিবেশীর বাড়িতে চড়াও হয়ে মহিলাদের উপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল। ওই যুবকের তাণ্ডবের খবর পেয়ে অবস্থা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযোগ, তাঁকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য। এর পরে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ গ্রেফতার করে ওই অভিযুক্ত যুবককে। সোমবার দোলের রাতে ঘটনাটি ঘটেছে করিমপুরের পাট্টাবুকা গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত যুবকের নাম নিতাই বিশ্বাস। অভিযোগ, নিতাই সোমবার দুপুর থেকেই মদ্যপান করে। পাশাপাশি, প্রতিবেশীর বাড়িতে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে চলেছিল। নিতাইয়ের বাড়ির পাশেই বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তি মদন বিশ্বাসের বাড়ি। ওই বাড়িতে তিনি ছাড়াও তাঁর দুই মেয়ে ও স্ত্রী থাকেন। মদন বিশ্বাসের দুই মেয়ে ঝুমা বিশ্বাস ও পপি দাস বৈরাগ্যের অভিযোগ, দুপুর থেকেই মত্ত অবস্থায় অকথ্য ভাষায় তাঁদের উদ্দেশে কটু কথা বলে চলেছিল নিতাই। তাঁদের কথায়, "এর প্রতিবাদ করলে সে বাড়ি থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে আক্রমণ করে। বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।" অভিযোগ, বিশেষ ভাবে সক্ষম মদন বিশ্বাসের দুই চাকার রিকশাও ভেঙে দেয় ওই অভিযুক্ত নিতাই। মদনের দাবি, "দরজা বন্ধ করে কোনও রকমে প্রাণে বাঁচি।’’
এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য আহত শ্যামল হালদারের অভিযোগ, "দুপুর থেকেই নিতাইয়ের গালিগালাজ করা, অত্যাচারের কথা শুনেছি। শেষমেষ নিতাইয়ের কার্যকলাপে আতঙ্কিত মহিলাদের আবেদন শুনে ওখানে গিয়েছিলাম। ওকে আচরণ সংযত করতে অনুরোধ করি। ও আমার কথা কর্ণপাত না করে উল্টে আমাকেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এমনকি, কুড়ুলের ডামাট দিয়ে আমায় কানের উপর পিঠে ও কোমরে একাধিক বার আঘাত করে।" তাঁর আরও দাবি, ওই সময় চিৎকার-চেঁচামেচিতে লোকজন জড়ো হয়ে গেলে নিতাই সেখান থেকে চলে যায়। মাথায়, কোমরে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত থাকায় পঞ্চায়েত সদস্য করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয়। শ্যামল বলেন, "হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আমার ছেলে সৌভিককে সঙ্গে নিয়ে সোজা করিমপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।"ধৃত নিতাইয়ের স্ত্রী দেবিকা বিশ্বাস বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপান করে নেশার ঘোরে ও ভুল করে ফেলেছে।" পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে সোমবার রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার তেহট্ট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।