যমুনা বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।
নেশার টাকা না দেওয়ায় মাকে কুপিয়ে খুন। ওই অভিযোগ উঠেছে সুকান্ত ঘোষ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। নিহত মহিলার নাম যমুনা বিশ্বাস (৫৫)। তাঁর বাড়ি ভীমপুর উত্তরপাড়া এলাকায়। এই ঘটনায় ছেলে সুকান্তকে গ্রেফতার করছে পুলিশ। সোমবার যুবককে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তার তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ভীমপুর থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিল। নিয়মিত নেশা করায় তাঁর স্নায়ুর সমস্যা দেখা দেয়। সেই কারণে বছরখানেক আগে তাঁকে কাজ থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকে সুকান্ত আর কাজে যোগ দেয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। জানা গিয়েছে, নেশার জন্য টাকার প্রয়োজনে সে বাড়িতে রোজ অশান্তি করত। সেই সঙ্গে তার মানসিক সমস্যাও বাড়তে থাকে বলে দাবি পরিবারের। যে কারণে কলকাতায় তার চিকিৎসা করানোও শুরু হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যার দিকে টাকার চেয়ে মায়ের সঙ্গে অশান্তি করে সুকান্ত। রাতে যুবকের বাবা সন্তোষ বিশ্বাস বাজারে গিয়েছিলেন। সে সময়ে বাড়িতে একাই ছিলেন যমুনা বিশ্বাস। তিনি বারান্দায় চৌকির উপরে শুয়ে ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে আচমকা সুকান্ত রান্নাঘরের ভিতর থেকে বটি নিয়ে এসে তার মায়ের গলায় ও মুখে এলোপাথাড়ি কোপ মারে। সেই অবস্থায় বটি হাতে নিয়েই সুকান্ত বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কিছু সময় পরে মহিলার স্বামী সন্তোষ বাড়ি ঢুকে দেখেন, তাঁর স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। যুবকের বাবার চিৎকারে প্রতিবেশীরা আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় ভীমপুর থানার পুলিশ। পুলিশ মৃতদেহ ময়না-তদন্তে শক্তিনগর পুলিশ মর্গে পাঠিয়ে দেয়। পরে সুকান্তকে পাশের একটি আমবাগান থেকে আটক করে পুলিশ। পরে যুবককে মাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
নিহতের স্বামী সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, “আমি বাড়িতে ছিলাম না। ঘরে ফিরে দেখি, আমার স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কাছে গিয়ে দেখি মারা গিয়েছে।” তাঁর দাবি, “ছেলের মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ওকে ডাক্তারও দেখানো হচ্ছিল। ভেবেছিলাম, বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাব চিকিৎসার জন্য। তার আগেই এমনটা ঘটে গেল। আমি চাই, ছেলেকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হোক।”
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার মিত কুমার বলেন, “ওই যুবকের মানসিক সমস্যা ছিল। তাকে দিয়ে কোনও কাজই করানো যেত না। অনেক দিন ধরেই কাজে আসত না। তবে ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”