প্রতীকী ছবি।
প্রসবের প্রায় দু’মাস দেরি আছে বলে জানিয়ে অন্তঃসত্ত্বাকে জেলা হাসপাতাল থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু বাড়ি ফিরে গাড়ি থেকে নামতে না নামতেই তাঁর প্রসব বেদনা প্রবল আকার নেয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সন্তান প্রসব করেন মহিলা। ওই গাড়িতেই প্রসূতি এবং সদ্যোজাতকে আবার জেলা সদর হাসপাতালে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মৃত্যু হয় শিশুটির। বাড়ির লোকজন চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আনলেও তা মানতে নারাজ অভিযুক্ত চিকিৎসক। তাঁর দাবি, নির্ধারিত সময়ের অনেক জন্মের কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার মাঝরাত থেকে ধুবুলিয়ার সোনডাঙা গ্রামের বাসিন্দা মাহানুর বিবির প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাঁকে রাতেই ধুবুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জেলা সদর হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেন। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক স্নেহাশিস গুপ্ত পরীক্ষা করে জানান যে প্রসবের প্রায় দু’মাস দেরি আছে। এখনই প্রসবের সম্ভাবনা নেই। গর্ভস্থ শিশুটি এখনও অনেকটাই অপরিণত, ফলে জোর প্রসব না করা উচিত। এই কারণ দেকিয়েই তিনি প্রসূতিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
মাহানুরের স্বামী মোবারক হোসেন মণ্ডল বলেন, “ডাক্তারবাবুকে কত বার অনুরোধ করলাম বাড়ি না পাঠিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখার জন্য। উনি শুনলেন না। বললেন, প্রসবের নাকি দুমাস দেরি আছে। হাসপাতলে ভর্তি রাখলে হয়তো আমার সন্তানকে এ ভাবে মরতে হত না।”
তবে অভিযুক্ত চিকৎসক স্নেহাশিস গুপ্তের দাবি,“হাসপাতালে রেখে প্রসব করালেও শিশুটিকে বাঁচানো যেত না। কারণ একেবারেই অপরিণত ছিল। ওজন ছিল মাত্র ১ কেজি ৪শো গ্রাম।” কিন্তু তা হলে কেন ভর্তি না রেখে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল এক ঘণ্টার মধ্যে প্রসব হয়ে গেল? স্নেহাশিসের দাবি, “অপরিণত শিশুর ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে। হঠাৎ করেই প্রসব হয়ে যায়। এ সব ক্ষেত্রে শিশু এতটাই ছোট থাকে যে সামান্য চাপে সহজেই বের হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।”
সেই ঝুঁকি যদি থেকেই থাকে তবে কোন ভরসায় তিনি প্রসূতিকে বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন? স্নেহাশিসের দাবি, “আমি যখন পরীক্ষা করেছিলাম তখন প্রসব যন্ত্রণা তেমন ছিল না। যোনিদ্বারের মুখও বন্ধ ছিল। প্রসবের সম্ভাবনা ছিল না বলেই এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে হাসপাতালে রাখতে চাইনি।” সদর হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”