বাবা আলতাব হোসেন (বাঁ দিকে), ছেলে আব্দুল মনিব (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
ফরাক্কার দক্ষিণ মহাদেবনগরে গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে লড়াই বাবা আলতাব হোসেনের সঙ্গে ছেলে আব্দুল মনিবের। এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে রাজি নন কেউই। বাবা আলতাব লড়ছেন সিপিএমের প্রতীকে, ছেলে আব্দুল মনিব লড়ছেন কংগ্রেসের টিকিটে। দু’জনেরই মিছিল বেরোচ্ছে গ্রামে।
আলতাব এর আগেও সিপিএমের টিকিটে দু’বার পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়েছেন। জিততে পারেননি, দলও ছাড়েননি। ষাটের কাছাকাছি বয়স আলতাবের। তিনি মহাদেবনগরে দলের শাখা সম্পাদকও। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ হিসেবে পরিচিতিও রয়েছে। মনিবের বামপন্থী ঘরে বড় হয়ে ওঠা। কিন্তু স্কুল জীবন থেকে কংগ্রেস রাজনীতি শুরু করেন। তবে নির্বাচনে দাঁড়ানো এই প্রথম, তাও আবার বাবার বিরুদ্ধে। মনোনয়নের দিন মনিব অবশ্য বাবার আশীর্বাদ নিতে ভোলেননি।
আলতাবের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ছেলে মনিব। মনিব স্ত্রী ছেলেমেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ির পাশেই আলাদা থাকেন। মনিব বলছেন, “বাবাও সিপিএম ছাড়তে পারবেন না, আমিও কংগ্রেস ছেড়ে যেতে পারব না। জোট করে লড়াই হলে বাবাকেই হয়ত ছেড়ে দিতাম আসনটি। কিন্তু জোট যখন হচ্ছে না তখন লড়তেই হচ্ছে।’’
আলতাব বলেন, “ছেলে সাবালক। বরাবরই কংগ্রেস করে। অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু জোর তো করতে পারি না। তাই ওর কংগ্রেস করাতে আপত্তি করিনি। কিন্তু এ ভাবে যে ছেলের সঙ্গে এক দিন লড়তে হবে, তা ভাবিনি কখনও।”
মনিবের স্ত্রী মুজকেরা বিবি বাবা ছেলের ভোটের লড়াইয়ে বাধা দেননি। তবে বার বার বলে দিয়েছেন, “বাবার বিরুদ্ধে কোনও খারাপ কথা বলা চলবে না।” আর মা শওকতারা বিবি বলছেন, “আমার ভোট দেব স্বামীকেই।”
বাবা-ঠাকুর্দার লড়াইয়ে মুশকিলে পড়েছে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মনিবের মেয়ে মাসুমা ইয়াসমিন। তার কথায়, ‘‘দু’জনই কাছের মানুষ। বাবা হারলেও কষ্ট পাব, দাদু হারলেও।’’