—প্রতীকী ছবি।
অন্য রাজ্যে কাজে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হল নদিয়ার বাসিন্দা এক নাবালিকা। লাগাতার ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে মৃত সন্তানের জন্ম দেয় সে। ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে চার যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছে নাবালিকার পরিবার। মহারাষ্ট্র পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে ওই নাবালিকার বয়ান নথিবদ্ধ করে। তদন্তের স্বার্থে মৃত সন্তানের ডিএনএ সংগ্রহও করা হয়।
রুজিরুটির টানে মুম্বইয়ে পাড়ি দিয়েছিল আদতে নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা ওই নাবালিকার পরিবার। এক নির্মাণ শ্রমিক মুম্বইয়ে তাঁদের কাজের খোঁজ দেন। নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, সেখানেই চলতি বছরের এপ্রিল মাস নাগাদ গণধর্ষণের শিকার হয় ওই নাবালিকা। চার যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর তদন্ত শুরু করে মহারাষ্ট্র পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তি এলাকায় গিয়ে ওঠে নাবালিকার পরিবার। স্থানীয় তিন যুবকের সহায়তায় একটি বহুতল ভবন তৈরির কাজে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে যোগ দেন নাবালিকার বাবা। স্থানীয় দু’টি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ পান নাবালিকার মা-ও। সেই সুবাদেই ওই তিন যুবকের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হয় পরিবারটির। ওই তিন যুবক এবং তাঁদের এক বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় নাবালিকার। অভিযোগ, এপ্রিল মাসে ওই চার যুবক মিলে নাবালিকাকে লাগাতার গণধর্ষণ করে। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনলে তাকে খুনের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। লাগাতার গণধর্ষণে নাবালিকাটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে মহারাষ্ট্র পুলিশে চার যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে পরিবার। পুলিশে অভিযোগ করার ফলেই পরিবারটির কাছে হুমকি-ফোন আসতে শুরু করে। প্রাণের ভয়ে কাজ ছেড়ে নদিয়ায় ফিরে আসেন তিন জন।
তদন্ত শুরু করার পর দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত মঙ্গলবার হঠাৎ নাবালিকার প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়। তাকে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে। সেখানে মৃত সন্তানের জন্ম দেয় ওই নাবালিকা। সঙ্কটজনক অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নাবালিকা। বাকি দুই অভিযুক্তের সন্ধান শুরু করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। এই প্রসঙ্গে নাবালিকার মা বলেন, “কাজ খুঁজে দেওয়ার নামে সম্পর্ক তৈরি করে আমাদের বাচ্চা মেয়েটিকে লাগাতার ধর্ষণ করেছে ওরা। পুলিশে অভিযোগ করলে খুনের হুমকিও দিয়েছে। তবু আমরা লড়াই ছাড়িনি, এর শেষ দেখে ছাড়ব।”