বাড়িতে বাবার মৃতদেহ, মেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে। প্রতীকী চিত্র।
বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে দিয়ে ‘নিট’ পরীক্ষা দিতে গেলেন মেয়ে। ফিরে এসে সৎকার কাজও সম্পন্ন করলেন। কিন্তু প্রিয়জনের মৃত্যুশোকের মধ্যেও পরীক্ষা দেওয়া থেকে পিছপা হননি মেয়েটি।
বছর আঠারোর তরুণী মোহর ভট্টাচার্য। তাঁর বাড়ি চাকদহ শহরের উত্তর ঘোষপাড়ার। রবিবার সকালে বাড়িতেই মোহরের বাবা হারাধন ভট্টাচার্য মারা যান। তিনি বালিয়া কামদেবপুরের একটি হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মোহরের ‘নিট’ পরীক্ষা ছিল। কল্যাণী ঘোষপাড়ার একটি স্কুলে তাঁর পরীক্ষার আসন পড়েছিল। বেলা ১১টা নাগাদ তিনি পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে যান। মোহরের মা চাকদহ বাপুজী বালিকা মন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা। নাম কবিতা সিংহ রায়। এ দিন বিকালে বাড়িতে বসে শোকগ্রস্ত অবস্থায় তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটা বাবাকে খুব ভালবাসত। কাঁদতে কাঁদতে মৃত বাবার দু’পায়ে প্রণাম করে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। মেয়েটা খুব একা হয়ে গেল!’’ চাকদহের একটি বেসরকারি স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন মোহর। বর্তমানে ডাক্তারি পড়ার জন্য পরীক্ষায় বসেছিলেন। এর জন্য রাজস্থানে পড়তেও গিয়েছিলেন। কিছু দিন আগেই বাড়ি ফিরে এসেছেন। এ দিন সন্ধ্যায় তিনি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরেন। তার পরে বাবার মৃতদেহ নিয়ে চাকদহের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহকাজ করাতে যান।
মোহর বলেন, ‘‘বাবা চাইতেন আমি চিকিৎসক হই। তাই পরীক্ষা দিতে যাই। এ দিন পরীক্ষা খুব একটা ভাল হয়নি। মাথা কাজ করছিল না।’’
তার পরে মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘‘কেঁদে কী হবে, মা। আমি আছি তো!’’