মহম্মদ আলম রহমান। নিজস্ব চিত্র।
মনের জোরেই এগিয়ে চলেছেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার গোড্ডা গণপতি আদর্শ বিদ্যাপীঠের ছাত্র মহম্মদ আলম রহমান। এ বার সে মাধ্যমিক পাশ করেছে ৬২৫ নম্বর পেয়ে। ছ’টি বিষয়ে লেটার পেয়েছে আলম। তবে আলম আর পাঁচ জনের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক নয়। তার হাত থেকেও নেই। প্রায় অসাড় দু’টি পা-ও। সেইসঙ্গে নিত্য দারিদ্রের আঘাত। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে ঠেলে মাধ্যমিকে ফলে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ১৬ বছরের আলম। মনে তার প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের মতোই মহাকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন।
আলম বাংলায় পেয়েছে ৯১, অঙ্কে ৯৮, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৪, ভূগোলে ৯৫। এ হেন অবাক করা সাফল্যে খুশি আলমের পরিবার। একইসঙ্গে খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে সহপাঠীরা। আলমের দাদা জহিরুল ইসলাম বলছেন, ‘‘অনেক সুস্থ-স্বাভাবিক পড়ুয়ার থেকে আমার ভাই ভাল ফল করেছে। আমাদের সকলেরই খুব আনন্দ হচ্ছে। ও যদি শারীরিক ভাবে সক্ষম হত তা হলে আরও অনেক দূর হয়তো পৌঁছতে পারত।’’
সাফল্যে উজ্জ্বল আলমের মুখও। মহাকাশ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের কথা শুনেছে সে। তাঁর কথাও পড়েছে বইয়ে। হকিংই আদর্শ আলমের কাছে। আলম বলছে, ‘‘আমি বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চাই। বড় হয়ে স্টিফেন হকিংয়ের মতো মহাকাশবিজ্ঞানী হব।’’
এমন আনন্দের দিনেও লুকিয়ে আশঙ্কার মেঘ। ছেলের স্বপ্নপূরণ হবে তো? আলমের বাবা ফিরোজ মহম্মদের কথায়, ‘‘আমি নিতান্তই গরিব। কোনওক্রমে দিন চলে। ছেলেকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ানোর সামর্থ্য নেই। সরকার বা কোনও সহৃদয় ব্যক্তি যদি আমাদের পাশে দাঁড়ান তা হলে স্বস্তি পাই।’’