নিজস্ব চিত্র
মাঝেই মাঝেই চিৎকার করছেন। বাবা-মাকে মারধর করছেন। কিছুতেই ঘরবন্দি হয়ে থাকতে চাইছেন না। রানাঘাটের চেনা বাড়িতে ফিরে যেতে চাইছেন মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেটি। ছেলের ওষুধ ফুরিয়ে গিয়েছে। এলাকায় ওষুধ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। লকডাউনে ডাক্তার দেখানোও যাচ্ছে না। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ওড়িশায় আটকে রয়েছে পরিবারটি।
লকডাউনে মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন রানাঘাটের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সত্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। বছর আটেক আগে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন। তাঁর জামাই একটি বেসরকারি সংস্থার কাজ করেন। মাস দুয়েক আগে তিনি কর্মসূত্রে পারাদ্বীপে বদলি হয়েছেন। গত ১৬ মার্চ সপরিবার মেয়েকে দিতে গিয়েছিলেন ওড়িশায়। লকডাউনে সেখানেই আটকে গিয়েছেন।
তিনি বলেন, “১৬ মার্চ মেয়েকে দিতে এসেছিলাম। আটকে পড়েছি। আমার ওষুধ ফুরিয়ে গিয়েছে। এখানে সেই ওষুধ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছেলেটাও বেপরোয়া হয়ে গিয়েছে। খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। বাড়িতে ফিরতে পারলে খুব ভাল হত। কী করব, বুঝতে পারছি না।’’ এখন অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।
রানাঘাট শহরে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কোর্টপাড়া এলাকায় সত্যব্রত বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ি। বছর একুশের ছেলে সায়ন বন্ধোপাধ্যায় মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর চিকিৎসা চলছে। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়, চিকিৎসক দেখাতে হয়। সত্যব্রতের স্ত্রী শ্রাবণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম ২২ মার্চ এক দিনের জন্য জনতা কার্ফু হবে। পরের দিন সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু তার পর টানা লকডাউন হবে, সেটা আমরা বুঝতে পারিনি। ছেলের ওষুধ ফুরিয়ে গিয়েছে। এখান অনেক খুঁজেও সেই ওষুধ পাওয়া যায়নি।’’
দু’জনেই জানাচ্ছেন, ওষুধ ছাড়া ছেলেকে রাখা যাছে না। তাঁদেরকে আক্রমণ করে বসছেন মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেটি। সত্যব্রত বলেন, ‘‘ছেলে বারবার বলছে, বাড়ি ফিরে যাব। কিন্তু কোনও উপায় নেই। তাই এ ভাবেই কাটাতে হচ্ছে।’’