—ফাইল চিত্র।
দেশের কৃষকদের আর্থিক সাহায্য দিতে বছর তিনেক আগে একটি প্রকল্প এনেছে কেন্দ্র। যার পোশাকি নাম ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মাননিধি যোজনা’। কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি প্রায়ই অভিযোগ করে, রাজ্য সরকারের ‘অসহযোগিতা’র জন্যই এ রাজ্যের কৃষকরা সেই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিকবার ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ওই প্রকল্পের এককালীন ১৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সম্প্রতি রাজ্যের কৃষকদের অ্যাকাউন্টে দু’ হাজার করে টাকা ওই প্রকল্পে পাঠানো শুরু হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, দু’দিন আগেই মুর্শিদাবাদের এক লক্ষ ৪৭ হাজার অনুমোদনপ্রাপ্ত কৃষকের মধ্যে প্রথম দফায় ৭৮,৫২২ জন কৃষকের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা ঢুকেছে।
মুর্শিদাবাদের উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপসকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘আপাতত ৭৮,৫২২ জন কৃষকের অ্যাকাউন্টে ২ হাজার করে টাকা ঢুকেছে। যাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তাঁদের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিও কৃষি দফতর থেকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’’ জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৬ লক্ষ কৃষক পরিবার রয়েছে। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার কৃষকের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪ লক্ষ ৫ হাজার কৃষকের অ্যাকাউন্টে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের টাকা পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলায় প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মাননিধির আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল। নির্বাচনী বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ার জেরে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন সংগ্রহ করা হয়। সেই সময় প্রায় দু’লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে এক লক্ষ ৬৫ হাজার আবেদন অনলাইনে পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে। নথিতে তথ্যগত ভুল থাকার জন্য ১৮ হাজার আবেদন বাতিল হয়। এক লক্ষ ৪৭ হাজার আবেদনকারী কৃষক সম্মাননিধি প্রকল্পে সুবিধা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন।
কৃষি দফতরের এক কর্তা জানান, কৃষক সম্মাননিধির সুবিধা পেতে কৃষকের নিজের নামে জমির রেকর্ড থাকা চাই। ২ হেক্টরের বেশি জমি থাকলে, চাকরিজীবী, সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তি, পেনশন পান এমন ব্যক্তিরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। সূত্রের খবর, কৃষক বন্ধু প্রকল্পে বছরে যেখানে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়, সেখানে কৃষক সম্মান নিধিতে বছরে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তবে কৃষকদের টাকা পাওয়ার কৃতিত্ব দাবি করেছে তৃণমূল, বিজেপি দু’দলই। জেলা তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কৃষক সম্মাননিধির টাকা চেয়ে কড়া চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রকে। তাই তারা টাকা দিয়েছে।’’ বিজেপির কিসান মোর্চার নবদ্বীপ জোনের আহ্বায়ক শাখারভ সরকারের প্রতিক্রিয়া, "প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি পালন করেন। তিনি বলেছিলেন কৃষকদের টাকা দেবেন। সেই কথা রেখেছেন।’’