প্রতীকী ছবি।
এ বারে করোনা থাবা বসাল বহরমপুরের একটি বেসরকারি প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবোরেটরিতে। রবিবার রাতে বহরমপুরের লালদিঘি লাগোয়া ওই প্যাথোলজির ছ’জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার তাঁদের বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ছ’জনের মধ্যে তিন জনের বাড়ি বহরমপুর শহরে, এক জনের বাড়ি বীরভূমে হলেও বহরমপুরের স্বর্ণময়ীতে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন এবং অন্য দু’জনের বাড়ি বহরমপুরের গ্রামীণ এলাকায়। তাঁরা ছাড়াও জেলায় আরও চার জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩৩ জন।
সোমবার ওই সংস্থার অন্যতম কর্তা সুমন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপাতত প্যাথোলজি কেন্দ্র বন্ধ করে কর্মীদের হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। আক্রান্তদের সঙ্গে রোগীদের সরাসরি যোগ নেই। কারণ তাঁরা ল্যাবের ভিতরে নমুনা পরীক্ষা করতেন।’’ প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্য দফতর জানতে পেরেছে ওই ৬ জন প্রায় ৪০ জনের সংস্পর্শে এসেছেন।
কীভাবে তাঁরা আক্রান্ত হলেন? জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং ওই সংস্থা সূত্রের খবর, গত ৩০ মে কলকাতার একটি সংস্থার তিন জন কর্মী এই প্যাথোলজি কেন্দ্রে একটি মেশিন বসাতে এসেছিলেন। মেশিন বসানোর পরে তাঁরা এই প্যাথোলজির ৯ জন কর্মীকে সেদিন প্রশিক্ষণ দেন। পরে কলকাতায় ফিরে গত ৫ মে পরীক্ষায় একজনের করোনা পজিটিভ হয়। সেদিন সকালে সেখান থেকে বিষয়টি এই প্যাথোলজি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। বিষয়টি জানতে পারার পরে শনিবার ওই ৯ জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়। রবিবার রাতেই জানানো হয় ৯ জনের মধ্যে ৬জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে বহরমপুরের এসিএমওএইচ রাজীব স্যানাল ওই বেসরকারি প্যাথোলজি কেন্দ্রটি ঘুরে দেখেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি, কলকাতা থেকে যে বায়োলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এসেছিলেন, তিনি কলকাতাতেই নিজের লালারস পরীক্ষা করতে দিয়ে এখানে এসেছিলেন। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়েছে। সেই খবর আমরা পেয়েছি। আমরা অনুমান করছি, তাঁর সংস্পর্শে এসেই প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবের ৬ কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিষয়টা আমরা যাচাই করে দেখছি।’’ স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, লালারস পরীক্ষা করতে দিয়ে তাঁর তো বেরোনো উচিতই হয়নি। তিনি সেখানে সোজা বহরমপুর চলে এলেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এলে আক্রান্ত হতে পারেন। সে ভাবে এই ৬জন আক্রান্ত হয়েছেন। তার জন্য ভয়ের কিছু নেই। পরীক্ষার জন্য প্যাথলজিতে যেতে হবে। প্যাথোলজি কর্তৃপক্ষকে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’’ লালদিঘি পাড়ের এক প্যাথোলজি কেন্দ্রের মালিক প্রতুল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা করোনার বিষয়ে সব ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছি।’’