job fraud

চাকরির ১৮ লক্ষ টাকা ফেরত চেয়ে ধর্না, ‘প্রতারক’-এর বাড়ির উঠোনে উনুন জ্বেলে রান্না পাঁচ যুবকের!

তিন বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরি হয়নি। ফেরত পাননি টাকাও। এমনই অভিযোগ করে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তের বাড়ির উঠোনে উনুন জ্বালিয়ে রান্না শুরু করে দিলেন পাঁচ প্রতারিত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

রানিতলা  শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:১৯
Share:

টাকা ফেরত চেয়ে চলছে অভিযুক্তের বাড়ির সামনে ধর্না এবং রান্না। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ হবে। আইসিডিএসেও চাকরি করিয়ে দেবেন। এ ভাবে বিভিন্ন সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরি হয়নি। ফেরত পাননি টাকাও। এমনই অভিযোগ করে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তের বাড়ির উঠোনে উনুন জ্বালিয়ে রান্না শুরু করে দিলেন পাঁচ প্রতারিত। টাকা ফেরত না-পাওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট কালের জন্য তাঁদের এই ‘ধর্না’ এবং উঠোনে বসে রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া চলবে বলে জানিয়ে দিলেন ওই পাঁচ যুবক। মুর্শিদাবাদের রানিতলা থানা এলাকায় এমন দৃশ্য দেখে শোরগোল শুরু হয়েছে এলাকায়। অন্য দিকে, অভিযুক্তের দাবি, তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।

Advertisement

রানিতলা থানার নশিপুরের বাসিন্দা বাইদুল শেখ। জেলার বিভিন্ন এলাকার মোট ছয় যুবক-যুবতীর কাছ থেকে সরকারের বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে মোট ১৮ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিন বছর পেরিয়ে গেলেও পাওনা টাকা কিংবা চাকরি, কিছুই না মেলায় সেই বাইদুলের বাড়িতে ধর্না শুরু করেছেন পাঁচ যুবক। মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তের বাড়ির উঠোনে উনুন জ্বালিয়ে দুপুরের রান্নাবান্না শুরু করেন তাঁরা। এমন ‘অভিনব’ প্রতিবাদ দেখতে ভিড় জমে যায় ওই বাড়িতে।

রানিনগরেরই শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল শেখ, ফিরোজ শেখ, লালগোলা থানার কানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ রফিক, ভগবানগোলা থানার রিক্তা খাতুনদের অভিযোগ, তাঁদের ঠকিয়েছেন বাইদুল। রিনার কথায়, ‘‘আইসিডিএসে চাকরি দেবে বলে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছিল। তার মধ্যে মাত্র ১০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে। ২০২১ সালে টাকা নেয়। এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরে গ্রুপ-ডি পদে চাকরি দেওয়ার জন্য দুই দফায় মোট ৬ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা নিয়েও এখনও চাকরি পাননি তিনি। তাই টাকা ফেরত চান মহম্মদ রফিক। তাঁর অভিযোগ, ‘‘টাকা ফেরত চাইতে গেলে পাল্টা কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বাইদুল। তাই বাধ্য হয়ে ধর্না দিয়েছি।’’

আসিফ মণ্ডল নামে আর এক জন বলেন, ‘‘তিন দিন থেকে ধর্নায় বসে আছি। হোটেল থেকে খাবার কেনার মতো পয়সা নেই। তাই বাধ্য হয়ে আশপাশের মানুষের সহযোগিতায় ওর বাড়ির উঠোনে উনুন জ্বালিয়ে দুটো ডাল-ভাত ফুটিয়ে খাচ্ছি। যত দিন না পয়সা ফেরত পাব, এ ভাবেই প্রতিবাদ চলবে।’’

যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাইদুল। তাঁর দাবি, ‘‘অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement