প্রতীকী ছবি।
ঝাড়খণ্ড সীমানায় শমসেরগঞ্জে আগ্নেয়াস্ত্র সহ মুঙ্গেরের এক ব্যক্তির গ্রেফতারের সূত্রে কালিয়াচক থেকে আরও চার কুখ্যাত আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করল জঙ্গিপুর ও মালদহ জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে। ধৃতরা বিহারের খাগারিয়া থানার রাকেশ কুমার, কংগ্রেস সিংহ, ও মহম্মদ খুরশেদ আলম এবং অন্য জন কালিয়াচক থানার খাসচন্দ্রপুরের রিন্টু রজক। তাদের কাছে মিলেছে ২টি অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় পিস্তল, ৪টি খালি ম্যাগাজিন ও ২৬০ গ্রাম ব্রাউন সুগার। জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী জানান, ধৃত ৪ জনই আন্তঃরাজ্য আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারি হিসেবে পরিচিত।
এদের জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা ও মালদহ জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে ধরা হয়েছে মঙ্গলবার সকালে কালিয়াচক থেকে। কালিয়াচক থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এর আগে ঝাড়খণ্ড হয়ে শমসেরগঞ্জে ঢোকার মুখে শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর সেতুর কাছে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এক আগ্নেয়াস্ত্র কারবারি। পাকুড়- ধুলিয়ান সড়ক পথে যৌথ ভাবে নাকা তল্লাশি চালানোর সময় সে ধরা পড়ে টাস্ক ফোর্স ও শমসেরগঞ্জের পুলিশের হাতে। ধৃত ব্যক্তির নাম টেম্পু মণ্ডল। বাড়ি বিহারের মুঙ্গের জেলার বারিয়াপুর থানার সাখারা গ্রামে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সামনে আসে ৪ আন্তঃ রাজ্য আগ্নেয়াস্ত্র পাচারকারির নাম।
একসময় এ জেলায় যখনই কোনো বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ধরা পড়েছে তখনই প্রথমেই উঠে এসেছে বিহারের মুঙ্গেরের নাম। আগ্নেয়াস্ত্র কারবারের কারণে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির দক্ষ কারিগর বিহারের ওই এলাকায় যথেষ্ট বেশি। রীতিমত সরকারি লাইসেন্স নিয়ে একসময় সেই সব আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি ও বেচাকেনা চলত মুঙ্গেরে।
কিন্তু গত কয়েক বছর বিহার সরকার আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে দক্ষ কারিগরেরা কাজ হারিয়েছেন বেশির ভাগই সেখানে। তাদের বেশির ভাগ অংশই বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত হলেও অনেকেই মোটা অঙ্কের আর্থিক লোভে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির বেআইনি কারবারে জড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশ সূত্র বলছে, বিদেশি ছাপ মারা সেই সব বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রই একসময় জোগান আসত মুর্শিদাবাদে চোরা পথে মুঙ্গের থেকে ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে। বহু দূরের পথ পেরিয়ে এ-ই কারবার ঝুঁকি পূর্ণ বলে এ জেলায় আগ্নেয়াস্ত্র চালান বর্তমানে মুঙ্গের থেকে সে ভাবে আসতে দেখা যায় না।
পুলিশি সূত্র বলছে, মুঙ্গেরে ধরপাকড় বাড়ায় কাজ হারিয়ে বিহারের সেই সব কারিগরের একটা অংশ গত কয়েক বছরে কালিয়াচকে ঘাঁটি গেড়েছে। এর আগে সেখানে মুঙ্গেরের বহু কারিগর ধরাও পড়েছে পুলিশের হাতে। সেই সব আগ্নেয়াস্ত্রের মোটা খদ্দের মুর্শিদাবাদের দুষ্কৃতীরা। এদিন পুলিশের হাতে ধৃতরাও বিহারের বাসিন্দা।
পুলিশের সন্দেহে, নির্বাচনের মুখেই সেই সব আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই পুলিশও নজরদারি বাড়িয়েছে ঝাড়খণ্ড সীমানায়।