প্রতীকী ছবি
নতুন করে সপ্তাহে দু’দিনের লকডাউন শুরুর আগেই এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ধরা পড়ল নদিয়ায়। সোম থেকে মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩৮টি নমুনার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।
সেই সঙ্গেই জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে জেলা প্রশাসনিক ভবনে। সেখানকার আধিকারিক ও কর্মীদের লালারস পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। তবে এর মধ্যে স্বস্তির খবর একটিই। যে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসায় জেলাক তাবড় স্বাস্থ্যকর্তাদের নিভৃতবাসে যেতে হয়েছে, তাঁর তার পরিবারের সদস্য, পরিচারিকা এবং নার্সিংহোমের কর্মী মিলিয়ে ২২ জনের লালারসে ভাইরাস মেলেনি। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা ও কর্মীদের পরীক্ষা এখনও বাকি।
তবে কর্তাদর মাথাব্যথার অন্য়তম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসনিক ভবনের নিরাপত্তা। কেননা ইতিমধ্যেই রাজ্যের কিছু জায়গায় গোষ্ঠী সংক্রমণের আঁচ মিলেছে। নানা কাজে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ প্রশাসনিক ভবনে আসেন। অনেক কর্মী বাসে চেপে আসেন নানা জায়গা থেকে। ফলে প্রশাসনিক ভবনের কর্মী ও আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গত শনিবার থেকে ক্যালেন্ডার করে পরীক্ষার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
সোমবার জেলা প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দফতরের কর্তা ও কর্মী মিলিয়ে ২০ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রাতে রিপোর্ট এলে দেখা যায়, সকলেরই নেগেটিভ। তবে এর মধ্যে দু‘জনের রিপোর্ট এখনও আসা বাকি। বিভিন্ন দফতর ধরে-ধরে লালারস পরীক্ষা করার জন্য ক্যালেন্ডার করা হয়ছে। যে দফতরে কর্মীর সংখ্যা বেশি বা যে দফতরে কাজের জন্য লোকজন বেশি আসে, সেই দফতরের কর্মীদের নমুনা আগে সংগ্রহ করা হচ্ছে।
জেলার এক কর্তার কথায়, “জেলার নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এসে দফতরে ঢুকছেন, আধিকারিকদের ঘরে ঢুকছেন। তাঁদের কেউ উপসর্গহীন বাহক কিনা বোঝা তো সম্ভব নয়। তাই কর্মীদের সকলের পরীক্ষা করে নেওয়াটা জরুরি।” প্রশাসনিক ভবনে ঢোকার দরজাগুলিতে আপাতত ‘থার্মাল গান’ দিয়ে দেহের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্তা করা হয়েছে।
এ দিনের আগে জেলায় এক দিনে সর্বোচ্চ ৩৫ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। তবে স্বাস্থ্যকর্তারা এক দিনে ৩৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়া নিয়ে খুব চিন্তিত নন। তাঁদের দাবি, নতুন কিটের কারণে আগের বেশ কিছু নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট পাঠানো বাকি ছিল। সেই সব বাকি থাকা নমুনা পরীক্ষা করে এক সঙ্গে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেই কারণেই এক সঙ্গে এত পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। জেলা সদর হাসপাতালের যে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আক্রান্ত হয়েছেন তাংর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকা ২২ জন আত্মীয় ও কর্মচারীর রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে তাঁর সংস্পর্শে আসায় জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলা হাসপাতালের সুপার-সহ যে পদস্থ কর্তা ও কর্মীদের নিভৃতবাসে যেতে হয়েছে, তাঁদের লালারসের নমুনা এখনও সংগ্রহ করা হয়নি। চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসার পাঁচ দিন পরে তাঁদের নমুনা
নেওয়া হবে। জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “ওই চিকিৎসকের ঘনিষ্ঠ স্পর্শে আসা ওই ২২ জনের ললারসের নমুনা আগেই সংগ্রহ করা হয়েছিল। সকলেই নেগেটিভ। আশা করি, বাকিদের ক্ষেত্রেও নেগেটিভই আসবে।”