ফাইল চিত্র।
কপাল ফিরতে চলেছে সুতির খোঁয়াড়ে আটক হাজার তিনেক গরুর।
জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসক প্রায় ৩০টি মামলায় আটক ওই গরুগুলিকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার গোশালায় তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্য দিকে গত এক সপ্তাহে একাধিক মামলায় ২৭৩টি গরুও ওই গোশালাকে হস্তান্তর করতে আদেশ দিয়েছেন জঙ্গিপুরের মহকুমা আদালত। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গরু ওই গোশালায় পাঠানোর তোড়জোড় চলছে। সীমান্তে পাচারের পথে এই গরুগুলি আটক করেছিল পুলিশ ও বিএসএফ।
১১ মাস ধরে সুতির চান্দামারির খোয়াড়ে রয়েছে গরুগুলি। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আইনজীবী মলয় গুপ্ত বলেন, “বহুদিন ধরেই আটক গরুগুলি চেয়ে আর্জি জানানো হয়েছিল দুই আদালতে। প্রতিটি মামলা ধরে ধরে রায় পেতে দেরি হওয়ার কারণেই বিপুল সংখ্যক ওই গরু খোঁয়াড় বন্দি হয়ে রয়েছে। প্রতিদিনই ৮/ ৯টি করে গরু মারাও যাচ্ছে।’’
গরু পাচার এক সময় রমরমা ছিল মুর্শিদাবাদে। এবার সেই পাচার বন্ধ করতে গিয়েও রীতিমত বিপাকে পড়েছে পুলিশ। সুতিতে পুলিশ-বিএসএফের হাতে প্রতিদিনই ধরা পড়ছে গরু। আর তার জেরেই এখন আটক গরু সামলাতেই হিমসিম অবস্থা পুলিশের।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে এখন গরু নিলাম না করে তা ইচ্ছুক গোশালায় পাঠানোই দস্তুর। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ নিয়ে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গত বছর নভেম্বর মাসে দ্বারস্থ হন জঙ্গিপুর মহকুমা আদালত ও এক্সিকিটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। গত ১১ মাস ধরে পুলিশ ও বিএসএফের হাতে বাংলাদেশ সীমান্ত পথে আটক হওয়া প্রায় তিন হাজার গরু রাখা রয়েছে সুতির চান্দামারির এক খোঁয়াড়ে। গরু রাখতে খোঁয়াড় মালিকদেরও এখন ঘটিবাটি বেচার অবস্থা। গরুর পিছনে প্রতি দিন খরচ প্রায় হাজার চল্লিশেক টাকা। অসুস্থ হয়ে প্রতি দিন খোঁয়াড়েই মারা পড়ছে ৮ থেকে ১০টি গরু। মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে বলে পুলিশকে জানালেও অভিযোগ, মৃত গরুগুলিকে বাইরেই ফেলে রাখা হচ্ছে। ফলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
খোঁয়াড় মালিক জামাল শেখ জানান, এলাকায় পুরোনো খোঁয়াড় বলতে এটাই। আগে সুতির মদনা গ্রামে ছিল খোয়াড়। কিন্তু সেখানে রোদে জলে প্রতিদিনই গরু মারা যাচ্ছিল। তাই খোঁয়াড় এখন সরিয়ে এনেছি সুতির চান্দামারির ১২ বিঘের এক আম বাগানে।’’ খোঁয়াড় মালিক বলেন, “ ৩ হাজার গরুর দেখভাল করতে ৬০ জন লোক রাখতে হয়েছে ৮ হাজার টাকার মাসিক বেতনে। গরুকে খাওয়াতে খরচ ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা খরচ প্রতি দিন। এর থেকে কবে রেহাই পাব কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ তাঁদের এখন বাস্তবিকই ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা!