ব্যাগে বিয়ার নিয়ে স্কুলে তিন ছাত্রী

বন্ধু চাকরি পেয়েছে। খালি হাতে তো আর সুখবর দেওয়া যায় না। তাই সে তার তিন বান্ধবীকে বিয়ারের বোতল উপহার দিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

বন্ধু চাকরি পেয়েছে। খালি হাতে তো আর সুখবর দেওয়া যায় না। তাই সে তার তিন বান্ধবীকে বিয়ারের বোতল উপহার দিয়েছিল।

Advertisement

একাদশ শ্রেণির তিন ছাত্রী সেগুলো লুকিয়ে ব্যাগে করে স্কুল নিয়ে আসে। ঠিক ছিল স্কুলের শেষে জমিয়ে বসা যাবে তিন জনে।

কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শিক্ষিকার কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল তিন জনেই। শনিবার কৃষ্ণনগরের ভালুকা এলাকার একটি স্কুলের ঘটনা। ওই তিন ছাত্রীর কাছ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ দু’টি বিয়ারের বোতল, চারটি কুড়কুড়ের প্যাকেট, একটি ঠান্ডা পানীয়ের বোতল ও চারটি প্লাস্টিকের গ্লাস ভর্তি একটি ব্যাগ উদ্ধার করেছে।

Advertisement

সঙ্গে সঙ্গেই ওই তিন ছাত্রীর বাবা-মাকে ডেকে পাঠানো হয় স্কুলে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি আলোচনায় বসেন। সেখানে ঠিক হয়, আগামী সোমবার এ বিষয়ে পরিচালন সমিতির বৈঠক হবে। অবিভাবকদেরও ডাকা হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, ওই তিন ছাত্রীর ভবিষ্যৎ কী।

কী ঘটেছিল এ দিন? স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, একাদশ শ্রেণির ওই তিন ছাত্রীকে শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ক্লাসের বাইরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে এক ছাত্রী ওই সময় একটি ভারী ব্যাগ ওড়না দিয়ে ঢেকে ক্লাসরুমে ঢুকছিল। তখনই বিষয়টি স্কুলের এক শিক্ষিকার নজরে আসে। ওই শিক্ষিকা ভারী ব্যাগে কী আছে, তা ওই ছাত্রীর কাছে জানতে চান। ব্যাগ খুলতেই দেখা যায়, বিয়ারের বোতল রয়েছে। এর পরেই অফিস ঘরে ডেকে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষিকারা। খানিক বকাঝকার পর তারা স্কুলে বিয়ার আনার কথা স্বীকার করে নেয়। স্কুল সূত্রে খবর, মেয়েদের এই কীর্তির কথা শুনে অবাক অবিভাবকরাও।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “এ ভাবে নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েরা স্কুলে মদের বোতল আনবে, ভাবতেই পারা যায় না। কেন এমন করল, আমরা খোঁজ নিচ্ছি।” প্রধান শিক্ষিকার দাবি, ওরা স্কুলকে জানিয়েছে তাদের এক বন্ধু নাকি সম্প্রতি চাকরি পেয়েছে। সেই বন্ধুই নাকি সেলিব্রেট করতে তাদের বিয়ার উপহার দিয়েছিল। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতিও বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় এটি একমাত্র বালিকা বিদ্যালয়। এই স্কুলে প্রায় দু’হাজার ছাত্রী পড়াশুনা করে। এমন স্কুলে এই ধরনের কাজ আমাদের খুবই ভাবাচ্ছে। ওরা যাতে শুধরে যায়, তা আমাদেরই দেখতে হবে।”

সমাজতত্ত্ববিদ রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বিষয়টি একেবারেই লঘু করে দেখার নয়। তবে ওই ছাত্রীদের স্কুল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়াও উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে তাদের জীবন আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে। হয়তো পড়াশোনাই বন্ধ হয়ে যাবে। বরং ওই তিন ছাত্রীকে স্কুলে রেখেই কাউন্সেলিং করানো দরকার। যাতে ভবিষ্যতে আর কখনও তারা এমন কাজ না করে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement