জেলে ৩ জন, বাপ্পার বাকি সঙ্গীরা অধরা

হাঁসখালি থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১২ জনের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তার মধ্যে চক্রান্তকারী হিসাবে রয়েছে তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ ঢালির নাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাঁসখালি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৩২
Share:

আদালতে ধৃতেরা নিজস্ব চিত্র

বগুলায় বিজেপি নেতার উপরে হামলার ঘটনায় শুক্রবার আর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। যে তিন জন ধরা পড়েছে, তারা ছাড়া বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক বলে পুলিশের দাবি। অভিযুক্তদের মধ্যে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির নাম থাকায় রাজনৈতিক টানাপড়েনও চলছে।

Advertisement

হাঁসখালি থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১২ জনের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তার মধ্যে চক্রান্তকারী হিসাবে রয়েছে তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ ঢালির নাম। বিজেপির দাবি, তাদের ৩৮ নম্বর জেলা পরিষদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তিলক বর্মনের উপরে হামলা ও খুনের চক্রান্ত করেছেন এই কল্যাণই। তাঁরই নির্দেশে বাপ্পা বিশ্বাস দলবল নিয়ে এসে তান্ডব চালায়।

তবে পুলিশের দাবি, এখনও পর্যন্ত তদন্তে কল্যাণ ঢালির যুক্ত থাকার কোনও সূত্র মেলেনি। কল্যাণ বলেন, “আমি তখন বাদকুল্লায় জনসংযোগ যাত্রার জন্য বৈঠক করছিলাম। ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানি না। আমি বরাবরই শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি।” তাঁর দাবি, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার নাম জড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।”

Advertisement

যা শুনে বগুলার এক বিজেপি নেতা মুচকি হেসে বলছেন, “সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুনের ঘটনায় মুকুল রায়ের নাম জড়ানোর সময়ে এই কথাটা তৃণমূলের মনে ছিল না?” যদিও রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের দাবি, “ব্লক সভাপতি যুক্ত না থাকলে এত বড় ঘটনা কোনও ভাবেই ঘটানো সম্ভব না।”

বুধবার রাতে বাড়ির কাছেই হামলা হয় তিলক ও তাঁর এক সঙ্গীর উপরে। মারে আহত হয়ে দু’জনেই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি। দুষ্কৃতীরা কয়েক রাউন্ড গুলিও ছুড়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে কয়েক বছর আগে নিহত ব্লক তৃণমূল সভাপতি দুলাল বিশ্বাসের ছেলে বাপ্পা বিশ্বাস এবং তার দুই সঙ্গীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তাদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেনি পুলিশ। তিন জনকেই জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

কেন পুলিশ ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইল না? বিশেষ করে যখন বাকি অভিযুক্তেরা তাদের নাগালের বাইরে? তার কারণ কি শাসক দলের চাপ? সে কথা অস্বীকার করে পুলিশের দাবি, ঘটনার রাতে বাড়ি থেকে বাপ্পাকে গ্রেফতার করার সময়েই তার কাছে দেশি ওয়ানশটার পাওয়া গিয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়ে যাওয়ায় তাকে আর হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। বাকি যারা জড়িত ছিল, তাদের পরিচয়ও জানা গিয়েছে। ফলে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করারও প্রয়োজন নেই বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, দায়ের হওয়া অভিযোগে ১২ জনের নাম থাকলেও প্রাথমিক তদন্তের পরে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় সাত-আট জন বাপ্পার সঙ্গে ছিল। বাপ্পা ছাড়াও একাধিক জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তারা সকলেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। ঘটনায় যুক্ত ছিলেন না, এমন কারও নাম অভিযুক্ত তালিকায় ঢুকে গিয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement