রেহান খুনে গ্রেফতার কিশোর

এই খুনের ঘটনায় আটক করা হল এক ১৭ বছরের কিশোরকে। নেহাত ব্যক্তিগত রাগেই বদলা নিতে এই খুন করেছে সে বলে জানায় পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২০ ০৮:৪৬
Share:

প্রতীকী চিত্র।

অপহরণ করে মুক্তিপণ চেয়ে শমসেরগঞ্জে সাত বছরের বালক রেহান মহালদারকে খুনের পিছনে লটারির টাকা নিয়ে বিবাদের কথা আপাতত গুরুত্ব দিচ্ছে না পুলিশ। শেষ পর্যন্ত মামলার মোড় ঘুরল পুলিশি তদন্তে মঙ্গলবার।

Advertisement

এই খুনের ঘটনায় আটক করা হল এক ১৭ বছরের কিশোরকে। নেহাত ব্যক্তিগত রাগেই বদলা নিতে এই খুন করেছে সে বলে জানায় পুলিশ।

ওই কিশোর মৃতের বাবা সুরজের সঙ্গেই একই বিড়ি কারখানায় কাজ করত। যাতায়াতও ছিল মৃত বালকের বাড়িতে। ধৃত কিশোর পুলিশকে জানিয়েছে, মৃত রেহানদের বাড়িতে গেলেই নানাভাবে উপহাস করত ওই সাত বছরের বালক। এমনকি ব্যঙ্গ বিদ্রূপ এমনই চরম সীমায় গিয়েছিল যে, তা অসহ্য হয়ে উঠেছিল তার কাছে। সেই রাগেই সে তাকে খেলার সময় তুলে নিয়ে যায় হাউসনগরের মাঠে একটি নার্সিংহোমের পিছনে। সেখানে নানা ভাবে অত্যাচার করে খুন করা হয় তাকে। ঘটনাস্থল থেকে মিলেছে এক জোড়া চটিও যা অভিযুক্তের পায়ের মাপের সঙ্গে হুবহু মিলে গিয়েছে ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ধৃত কিশোর প্রথম দিকে নানা মিথ্যে কথা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়েছে। এমনকি মোড় ঘোরাতে লটারির টাকা নিয়ে বিবাদকেও সামনে আনার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তার কোনও প্রচেষ্টাই সফল হয়নি। এই খুনের কিনারা করে ১৭ বছরের অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক অন্য সকলকেই আপাতত ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ ।

ধৃত কিশোর যে শুধু রেহানকে খুনের কথা স্বীকার করেছে তাই নয়, ধৃত কিশোরকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হলে খুনের ঘটনা সে পুনর্নিমাণ করেও দেখিয়েছে।

জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘নিহত বালকের অভ্যেস ছিল মোবাইলে গেম খেলা। তাই সে তার মায়ের মোবাইল নিয়েই শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ গেম খেলছিল। সেই মোবাইলটিও উদ্ধার করা হয়েছ। তা থেকে শনিবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিট ও ১২টা ৫৭ মিনিটে মৃতের বাবাকে দুটি ফোন কল করা হয়েছে যাতে মুক্তিপণের টাকা চাওয়া হয়। ওই কিশোর যে খুনের সঙ্গে জড়িত তা আরও নিশ্চিত হয়েছে মৃতের সারা গায়ে কোথায় কোথায় আঘাতের চিহ্ণ ছিল, তা হুবহু বর্ণনা করেছে ওই কিশোর, যা মৃতদেহের সমস্ত ক্ষত চিহ্নের সঙ্গে মিলে গেছে।”

তবে পুলিশ সুপার জানান, যেহেতু ধৃত যুবক নাবালক তাই তার নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করা যাবে না। যদিও ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয় নি। বুধবার তাকে জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হবে।

এদিকে পুলিশের এই তদন্তে অবশ্য পুরোপুরি খুশি নন মৃত বালকের পরিবার।

মৃতের কাকা রিটন মহলদার ধৃত কিশোরের সঙ্গে ঠাট্টা, মস্করার অথা অস্বীকার না করলেও বলেন, “ওই কিশোরের পক্ষে এ ভাবে সাত বছরের ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা কী করে সম্ভব? এর পিছনে কেউ না কেউ জড়িত রয়েছেই। তাই পুলিশ আরও ভাল ভাবে তাদের খোঁজার
চেষ্টা করুক।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement