—নিজস্ব চিত্র।
‘উট কি কাঁটা বেছে খায়?’— প্রশ্ন ছিল লালমোহনবাবুর। ফেলু মিত্তিরের মুখে তার জবাব জুগিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। কিন্তু মরুভূমির রুক্ষশুষ্ক জলহাওয়া, সেখানকার সেই কাঁটাওয়ালা গাছ না-পেলে তাদের কী হাল হয়, সেটা বেশ টের পেল মুর্শিদাবাদের জেলা প্রশাসন ।
রাজস্থানের ১৬ অতিথিকে শান্ত-সুস্থ রাখতে নাজেহাল দশা হয়েছিল জেলা পুলিশকে। গরু-ছাগল দেখভালের ব্যাপারে সাধারণ কিছু জ্ঞানগম্যি রয়েছে এই কনস্টেবল, এসআইদের। সেই ভাবেই চলছিল এই অতিথিদের খাতিরদারি! তা বলে ক্যাকটাসের বদলে কাঁঠাল পাতা তাদের রুচবে কেন! মুর্শিদাবাদে গরু-ছাগলের মতো বেঁচে থাকতে গিয়ে বেজায় মুষড়ে পড়েছিল অবোলা প্রাণীগুলি। অবশেষে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে তাদের নিজভূমে ফেরানোর ব্যবস্থা করলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাজস্থান থেকে উট এনে বিক্রি করার অভিযোগে গত ২ নভেম্বর এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম আল্লারাখা শেখ। তিনি কান্দি থানার মহালন্দির চাঁদপুরের বাসিন্দা। মরুরাজ্য থেকে আনা উটগুলিকে চড়া দামে বিক্রি করাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হওয়া উটগুলিকে রাখা হয় বহরমপুরে। কিন্তু অন্য পরিবেশে থাকতে থাকতে উটগুলির স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছিল। তারা ক্রমেই ঝিমিয়ে পড়ছে দেখে প্রাণী সম্পদ দফতরের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। মূলত তাদের উদ্যোগেই উটগুলিকে আবার রাজস্থানে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। উটগুলিকে পাঠানো হয়েছে জয়পুরের জোটওয়ারা বাসুদেবপুরে ‘ধ্যান যোগ গাউ সেবা সোসাইটি’তে।
কিন্তু কী ভাবে পাঠানো হল উটগুলিকে? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ থেকে রাজস্থানের মরুভূমির দূরত্ব মেরেকেটে ২২০০ কিলোমিটার। রঘুনাথগঞ্জের ওমরপুরে চিকিৎসার পরেই চারটি লরি করে উটগুলিকে মরুরাজ্যে পাঠানো হয়। তাদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সঙ্গে পাঠানো হয় দু’জন পুলিশকর্মী ও কয়েক জন উটপালককে।