১০০ দিনের কাজের যাবতীয় খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার।
গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই অর্থ আদায়ের জন্য ১০০ দিনের কাজের খরচ নিয়ে কড়া অবস্থান নিল নবান্ন। ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ হওয়া সত্ত্বেও যে সমস্ত ক্ষেত্রে স্থায়ী কোনও কাজ হয়নি বা তুলনায় কম কাজ হয়েছে, অথচ সেই সমস্ত প্রকল্পে খরচ দেখানো হয়েছে, এমন প্রকল্পের টাকা অবিলম্বে উদ্ধার করতে বলা হয়েছে এক নির্দেশিকায়। পুকুর কাটা থেকে শুরু করে রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে কোথাও যদি এই ধরনের কাজ হয়ে থাকে, সেই সব ক্ষেত্রে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। গত এক মাস ধরে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিনিধি দল ব্লকে ব্লকে গিয়ে পঞ্চায়েতের কাজ সরজমিনে খতিয়ে দেখেছে। ১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রে তাঁরা বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছেন বলেই সূত্রের খবর।
গত ডিসেম্বর মাস থেকে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা প্রদান বন্ধ রেখেছে মোদী সরকার। তাই ১০০ দিনের কাজের যাবতীয় খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার। উদ্দেশ্য, যাতে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে প্রধানমন্ত্রীর কাছে করে আসা দাবির সত্যতা প্রমাণ করে পাওনা আদায় করা যায়। সম্প্রতি প্রতিটি জেলার গ্রামোন্নয়নের কাজের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন পঞ্চায়েত দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। সদ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনিও এই বিষয়ে বিশেষ নজর দিয়ে তদারকি করছেন। সূত্রের খবর, খরচ হওয়া সত্বেও কাজ হয়নি, এমন ঘটনা উঠে এসেছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সোশাল অডিট ইউনিটের সমীক্ষাতেই। যার জেরে খরচ হওয়া টাকা উদ্ধারের সুপারিশ করেছে এই ইউনিটটি। মাস খানেক আগে এই একই কারণে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও মালদহ-সহ চারটি জেলাকে জরিমানা করেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলটি। এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি কড়া অবস্থান নিল রাজ্য সরকারও।
১০০ দিনের কাজের অধীনে মূলত দু'টি ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ হয়ে থাকে। কাজের উপাদান কেনা বাবদ বরাদ্দ এবং এই কাজে নিযুক্ত অদক্ষ শ্রমিকদের পারিশ্রমিক খাতে বরাদ্দ। মজুরির ক্ষেত্রে অর্থ সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। উপাদান বাবদ যে খরচ দেখানো হয়েছে, তা উদ্ধার করতে গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির পাশাপাশি টাকা ফেরত দিতে দায়বদ্ধ থাকবে সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার সংস্থাও। ওই প্রকল্পগুলিতে নিযুক্ত অদক্ষ শ্রমিকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থ ফেরত নেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পঞ্চায়েত দফতর। তবে এই কাজ যে খুব একটা সহজ হবে না, তা মানছেন সরকারি আধিরাকিরাই।